সব মানুষই সমস্যা দেখা দিলে কোনো কিছু ভাবার আগেই তার সমাধান চায়।
এর কারণ কী?
সবচাইতে বড় কারণ, স্থিতাবস্থা বা স্থিতিশীল অবস্থা বা বর্তমান আরাম টিকাইয়া রাখার জন্যেই সমস্যার সমাধান চায় মানুষ। তারা ঝুঁকিশূন্য বর্তমান ছাইড়া ভবিষ্যতের ঝুঁকিতে ঢুকতে চায় না।
কিন্তু এই সমাধান কি মানুষের মনের শান্তি আনতে পারে?
পুরাটা পারে না। অর্ধেক পারে। সমস্যার সমাধানের পরেও তার মানসিক উদ্বেগ থাইকা যায়। ভবিষ্যৎ সমস্যার আশঙ্কার এক নতুন জগৎ বর্তমান আরামরে চিরকালের জন্যে কণ্টকময় কইরা তোলে।
কাজেই সমস্যার সমাধান নয়, বরং সমস্যা যেন সমস্যা হিসাবে দেখা না দিতে পারে সেই রকম একটা বর্তমান ক্রিয়েট করতে হবে, সমস্যার উদয় হইলে পরে।
অর্থাৎ সমস্যাকে অপশনে পরিণত করতে হবে।
সমস্যা এবং সমাধানের উর্ধ্বে উঠতে হবে নিজেকে।
সমাধান ও সমস্যা উভয়েই অপশন বা বিকল্পের বাইরে যেন কিছু না হয়। গরুর কলিজা কিনবেন নাকি শইল মাছ তার বাইরে যাইতে দিবেন না সমস্যা ও সমাধানরে।
তাতে চিত্ত মুক্ত থাকবে, আপনি সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন টিকচিহ্ন দেওয়ার মতোই আয়াসহীন ভাবে।
সেইটা করা যায় এক, সমস্যারে না-সমস্যায় পরিণত কইরা। দুই, সমস্যার যে ক্ষেত্রতল বা পটভূমি বা পাটাতন তা থিকা নিজে বাইর হইয়া যাইয়া।
মনে রাখবেন, যে কোনো সমস্যার সমাধান বা আপাত সমাধান আসলে কোনো সমাধান না।
সমস্যার সমস্যা হিসাবে কার্যকর না থাকা বা আবির্ভূত হইতে না পারাটাই মানুষের সকল সমস্যার আসল সমাধান।
সমস্যা দেখা দিলে ভাববেন, আসলে এইটা সমস্যা নাকি আপনার স্থিতিশীল অবস্থা টিকানোর ফলস সংগ্রাম?
এও মনে রাইখেন, যেকোনো সমস্যাই ‘সমস্যা’ নাকি ‘সমস্যা-না’—এই দুই অপশনের একটা মাত্র। আপনি সমস্যারে গ্রহণ করবেন, নাকি করবেন না—তা ঠিক করার মালিক আপনিই।
যে কোনো পরিস্থিতিতে নতুন নতুন অপশন তৈরি করুন, সে অনুসারে সিদ্ধান্ত নিন।
নো সমস্যা, ডু ফুর্তি।
পান্থপথ, ঢাকা ৩০/১০/২০২১
কভারে ব্রাত্য রাইসু; ছবি. পারমিতা হিম, ২০১৫