রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলিকে চিহ্নিত করতে সেগুলিতে নতুন লেবেল লাগানোর ঘোষণা দিয়েছে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যম টুইটার।

সরকার নিয়ন্ত্রিত টুইটার অ্যাকাউন্টগুলি থেকে শেয়ার করা তথ্য ও সংবাদের ব্যাপারে ইউজারদেরকে আরো সচেতন করতেই তাদের এই উদ্যোগ।

টুইটার বলছে, “সরকার এবং রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত মিডিয়ার অ্যাকাউন্টগুলির সঙ্গে কথোপকথনের ক্ষেত্রে ইউজারদের অভিজ্ঞতাকে আরো স্বচ্ছ করার খাতিরেই আমরা এই উদ্যোগ নিচ্ছি। এখন থেকে আমরা দুটি ভিন্ন ধরনের প্রোফাইল লেবেল যুক্ত করে এই ধরনের অ্যাকাউন্টগুলিকে চিহ্নিত করবো। যাতে আপনারা তাদেরকে এবং তাদের টুইটগুলিকে সহজেই চিনতে পারেন।”

টুইটার বলছে, “সরকার এবং রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত মিডিয়ার অ্যাকাউন্টগুলোর সঙ্গে কথোপকথনের ক্ষেত্রে ইউজারদের অভিজ্ঞতাকে আরো স্বচ্ছ করার খাতিরেই আমরা এই উদ্যোগ নিচ্ছি। এখন থেকে আমরা দুটি ভিন্ন ধরনের প্রোফাইল লেবেল যুক্ত করে এই ধরনের অ্যাকাউন্টগুলোকে চিহ্নিত করবো। যাতে আপনারা তাদেরকে এবং তাদের টুইটগুলোকে সহজেই চিনতে পারেন।”

সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিত্বকারী কর্মকর্তাদের অ্যাকাউন্টে ‘Government Account’ (সরকারী অ্যাকাউন্ট) আর সরকার নিয়ন্ত্রিত মিডিয়ার অ্যাকাউন্টে ‘State-Affiliated Media’ (রাষ্ট্র সংশ্লিষ্ট মিডিয়া) লেবেল যুক্ত করা হবে।

কোন কোন ধরনের ক্যাটেগরির অ্যাকাউন্টে এই দুটি লেবেল লাগানো হবে?

‘সরকারী অ্যাকাউন্ট’ এই লেবেল দেওয়া হবে প্রধান সরকারী কর্মকর্তাদের অ্যাকাউন্টে। এ তালিকায় আরো রয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী, সরকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ, রাষ্ট্রদূত, অফিসিয়াল মূখপাত্র এবং কূটনৈতিক নেতারা। শুরুতে এই লেবেল শুধু বিদেশে নিযুক্ত সিনিয়র কর্মকর্তা এবং রাষ্ট্রের অফিসিয়াল মূখপাত্রদেরকে দেওয়া হবে।

‘রাষ্ট্র সংশ্লিষ্ট মিডিয়া’ এই লেবেল দেওয়া হবে রাষ্ট্র সংশ্লিষ্ট মিডিয়া, তাদের প্রধান সম্পাদক এবং সিনিয়র স্টাফদের।

‘রাষ্ট্র সংশ্লিষ্ট মিডিয়া’ এই লেবেল বেশ কার্যকরী হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই লেবেল না থাকলে অনেক টুইটার ইউজারই সচেতন হতেন না এই ধরনের যেসব অ্যাকাউন্ট থেকে তারা সংবাদ পাচ্ছেন সেগুলি রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত। আর এ কারণে সেগুলি সবকিছু শেয়ার করতে পারে না। এবং জাতীয় স্বার্থের বিষয়গুলি ইতিবাচকভাব প্রমোট করতে বাধ্য।

একই সঙ্গে প্রোফাইল এবং টুইটে ‘রাষ্ট্র সংশ্লিষ্ট মিডিয়া’ এই লেবেল থাকার ফলে এখন আরো বেশি সংখ্যক লোকে এসব অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট করা টুইট শেয়ারের ব্যাপারে দুবার ভাববে। অথবা অন্তত তাদের শেয়ার করা নিউজ কন্টেটের পেছনে কী উদ্দেশ্য থাকতে পারে সে বিষয়ে চিন্তা করবে।

ফেসবুক গত জুনেই এই ধরনের লেবেল দেওয়া শুরু করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনকে সামনে রেখে স্বচ্ছতা বাড়ানোর কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ফেসবুক এই পদক্ষেপ নিয়েছে। ২০১৮ সালে টুইটারও রাজনৈতিক প্রার্থীদের এবং নির্বাচিত কর্মকর্তাদের প্রোফাইলে লেবেল যুক্ত করেছিলো। যা গত বছরের শেষদিকে আবার হালনাগাদও করা হয়েছে।

এর ফলে রাষ্ট্র সংশ্লিষ্ট গ্রুপগুলি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে কীভাবে কোনো বিষয়ের আখ্যান নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেছে তারও একটা ইতিহাস থাকবে। এই লেবেল ডিজিটাল মিডিয়া বিষয়ে লোকের জ্ঞানও বাড়াবে। অন্তত লোকে প্রতিটি পোস্টের পেছনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে প্রশ্ন করতে শিখবে।

টুইটার বলেছে, তারা তাদের রিকমেন্ডেশন, হোম টাইমলাইন, নোটিফিকেশন এবং সার্চেও এখন থেকে আর রাষ্ট্র সংশ্লিষ্ট মিডিয়া অ্যাকাউন্ট অন্তর্ভুক্ত করবে না।

টুইটার জানিয়েছে, মুক্ত ও স্বাধীন গণমাধ্যম গড়ে তোলার চলমান প্রচেষ্টার অংশ হিসেবেই তারা এই পদক্ষেপ নিয়েছে।

প্রথমে কয়েকটি দেশের অ্যাকাউন্টগুলিতে এই লেবেল দেওয়া করা হবে। পরে বিশ্বের সব দেশই এর আওতায় আসবে।

সূত্র. সোশ্যাল মিডিয়া টুডে