এই প্রথম গবেষণার ফল থেকে জানা গেল, কারো বুদ্ধিমত্তা নির্ভর করে তার মস্তিষ্কের পরিবর্তন ও বিভিন্ন অংশের মধ্যে যোগাযোগ ক্ষমতার ওপর।
ওয়ারউইক বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন গবেষক মানব মস্তিষ্কের রহস্য উদ্ঘাটনে গবেষণাটি চালিয়েছেন।
গবেষণায় ভিন্ন ভিন্ন সময়ে কোনো একজনের মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশের সংযোগের ধরন বিশ্লেষণ করা হয়েছে। মানুষের মস্তিষ্ক সম্পর্কে আরও সঠিক ধারণা ভবিষ্যতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের উন্নয়নে সাহায্য করতে পারে বলে ধারণা করছেন গবেষকরা।
ওয়ারউইকের কম্পিউটার বিজ্ঞানের অধ্যাপক জিয়ানফেং ফেং বলেছেন, গবেষণায় ব্যবহৃত আধুনিক ব্রেইন ইমেজিং কৌশল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে আরও গভীরভাবে বুঝতে সাহায্য করেছে। পাশাপাশি সিজোফ্রেনিয়া ও বিষণ্ণতার মত রোগ নির্ণয়েও এটি প্রাথমিকভাবে সাহায্য করে।
বিশ্বের হাজারেরও বেশি মানুষের ওপর স্পেশাল এম.আর.আই পরীক্ষা করেন তারা। পরীক্ষা থেকে দেখা গেছে, মস্তিষ্কের যে অংশ কোনো কিছু শেখা ও বিকাশ ঘটানোর কাজ করে সেগুলি খুব ঘন ঘন পরিবর্তিত হয়। অর্থাৎ এই অংশের স্নায়ু মস্তিষ্কের অন্যান্য অংশের সাথে তাদের সংযোগ খুব দ্রুত পাল্টাতে পারে। এবং তা হতে পারে মিনিট কিংবা সেকেন্ডের ব্যবধানে। যাদের মস্তিষ্কে দ্রুত এই পরিবর্তন ঘটে তারা তুলনামূলকভাবে বেশি বুদ্ধিমান হয়ে থাকে।
অপরদিকে, মানুষের বুদ্ধিমত্তার সাথে যেসব অংশ সম্পর্কিত নয় যেমন দৃষ্টি, শ্রবণ ইত্যাদির সাথে যুক্ত স্নায়ুগুলি দ্রুত পরিবর্তনের সাথে দ্রুত খাপ খাইয়ে নিতে পারে না।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের বর্তমান প্রযুক্তিতে এই দুটি জিনিসের অভাব আছে। অধ্যাপক জিয়ানফেং-এর গবেষণায় দেখা গেছে, মানব মস্তিষ্কের বিকাশের মূল কারণ মস্তিষ্কের এই পরিবর্তন ক্ষমতা।
মস্তিষ্কের জটিলতা নিয়ে এই ধারণা কম্পিউটারের কৃত্রিম নিউরাল নেটওয়ার্কের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এছাড়া এটি মানসিক স্বাস্থ্যের মত কঠিন বিষয় বুঝতে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সিজোফ্রেনিয়া, অটিজম ও অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপারঅ্যাকটিভ ডিজর্ডার (ADHD) রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির মস্তিষ্কের পরিবর্তনশীলতা বা খাপ খাইয়ে নেয়ার ক্ষমতার ক্ষেত্রে ভিন্নতা দেখা যায়। এসব মানসিক রোগের মূল কারণ উদ্ঘাটনের মধ্য দিয়ে ভবিষ্যতে এসবের প্রতিকার ও প্রতিরোধ সম্ভব।