গত ২১ অক্টোবর, ২০১৯ তারিখ রোম ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে তার নতুন সিনেমা ‘দ্য আইরিশম্যান’ এর প্রদর্শনীতে এই মন্তব্য করেন আমেরিকান ফিল্মমেকার মার্টিন স্করসেজি। সম্প্রতি সিনেমাটির প্রচারণা চালাতে গিয়ে সংবাদমাধ্যমে তিনি ধারাবাহিকভাবে মার্ভেল স্টুডিওজের সুপারহিরো মুভিগুলির সমালোচনা করে যাচ্ছেন।

স্করসেজি মনে করেন, মার্ভেল সিনেম্যাটিক ইউনিভার্সের সুপারহিরো জঁনরার মুভিগুলি প্রকৃত ‘সিনেমা’ নয়। বরং গঠন ও উদ্দেশ্যের দিক থেকে এগুলিকে বিভিন্ন থিম পার্কের রাইডের সাথে তুলনা করা যায়। ‘দ্য গডফাদার’ সিরিজের জন্য বিখ্যাত পরিচালক ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলা’ও স্করসেজির এই মন্তব্যকে সমর্থন দিয়েছেন।

“আমি আশা করছি যেন হলিউডের থিয়েটারগুলি ‘আইরিশম্যান’ এর মতো ন্যারেটিভ সিনেমাকেও সাপোর্ট করেন। কিন্তু বর্তমানে দেখা যাচ্ছে যে এসব থিয়েটারে কেবল থিম পার্ক, অ্যামিউজমেন্ট পার্ক ও কমিক বুক ফিল্মগুলিকেই সাপোর্ট দেওয়া হচ্ছে। থিয়েটারগুলি রীতিমতো দখল করে নিচ্ছে এসব ছবি। এধরনের ছবি থাকতেই পারে, তাতে কোনো সমস্যা নাই আমার। তবে আমাদের তরুণ প্রজন্ম ধরে নিবে যে ওগুলিই আসল সিনেমা—এমনটা হওয়া মোটেও উচিত না।”

আমেরিকান শ্রমিক ইউনিয়ন নেতা জিমি হফার নিখোঁজ হবার বাস্তব ঘটনা অবলম্বনে লেখা হয়েছে ‘আইরিশ্য্যান’ সিনেমার কাহিনি। অভিনয়ে আছেন আল পাচিনো—যিনি প্রথমবারের মতো স্করসেজির সাথে কাজ করছেন—রবার্ট ডি নিরো, জো পেশি এবং হার্ভি কাইটেল।

আবারো গ্যাংস্টার জঁনরায় ফিরে যাওয়া নিয়ে স্করসেজি জানান, “এই সিনেমার গল্প মূলত মানুষের ক্ষণস্থায়ী জীবন আর সেই জীবনের বিভিন্ন পর্যায় নিয়ে। এখানে তাৎক্ষণিক এক মানবিক অভিজ্ঞতা পাওয়া যাবে, যার সাথে প্রায় সবাই আশা করি রিলেট করতে পারবেন।”

রোম ফেস্টিভ্যালের সংবাদ সম্মেলনে এক ইতালিয়ান সাংবাদিক তার নতুন এ সিনেমায় নারী চরিত্রের অনুপস্থিতি নিয়ে জিজ্ঞেস করলে স্করসেজি বেশ হতাশার সাথেই বলেন, “এটা তো কোনো ভ্যালিড পয়েন্ট হলো না। সেই ১৯৭০ সাল থেকে এধরনের প্রশ্ন করা হচ্ছে আমাকে।… যদি কাহিনিতে কোন নারী চরিত্রের প্রয়োজনই না থাকে, তাহলে সেখানে অযথা তাদেরকে নিয়ে আসা তো সবার সময় নষ্ট ছাড়া আর কিছু না। যদি কাহিনির প্রয়োজনে প্রধান চরিত্রকে নারী হতে হয়, তাহলে তাই হবে।”

স্করসেজি আরো আক্ষেপ করে বলেন, তার পরিচালিত অ্যালিস ডাজেন’ট লিভ হেয়ার এনিমোর, এইজ অফ ইনোসেন্স, ক্যাসিনো—এসব সিনেমায় গুরুত্বপূর্ণ নারী চরিত্র থাকার পরেও এগুলি নিয়ে তেমন কথা হয় না।

“নারী চরিত্র নিয়ে সিনেমা বানাতে তো সমস্যা নাই আমার। কিন্তু আমার বয়স এখন ৭৬, সময়টা পাবো কীভাবে বলেন? সামনে কী হবে না হবে তার কিছুই জানি না আমরা। সময়ই তো নাই।”

সূত্র. দ্য হলিউড রিপোর্টার