আগের পর্ব পর্ব ১

সিজন ১, এপিসোড ৯

দ্য ওয়েল টেম্পার্ড ক্লেভিয়ার

ওয়েস্টওয়ার্ল্ড সিরিজের প্রথম সিজন প্রায় শেষ। আর একটা মাত্র পর্ব বাকি আছে। এই ৯ নাম্বার এপিসোডে আসার পর ওয়েস্টওয়ার্ল্ড স্টোরিটেলিং এর কাজটা ভাল ভাবে করতে পারছে কিনা সেটা এখনও বলা যাচ্ছে না, সেটা ১০ নাম্বার পর্ব অর্থাৎ শেষ পর্বের পর হয়ত বলা যাবে।

দেখা যায় যে, বিজ্ঞানের কোনো অসাধারণ থিওরি হয়ত রিয়ালিটিকে আলাদাভাবে ব্যাখ্যা করতেছে বা একেবারে আউট অব দ্য বক্স কোনো সম্ভাবনা সামনে নিয়ে আসতেছে। সেই থিওরি থেকে কোনো একটা ভাল স্টোরি বা সিনেমা বা সিরিজ তৈরি করা হইল, কিন্তু অনেক সময় তার শেষটা খুবই অর্ডিনারি হয়, বা অর্ডিনারির চাইতেও কম হয়।

সায়েন্সের সেই থিওরি পুরা গল্পে যে আলাদা রিয়ালিটি তৈরি করে, কনক্লুশনে দেখা যায় সেইটার থেকে খুবই অর্ডিনারি একটা রিয়ালিটি থাকে।


আশরাফুল আলম শাওন


‘ওয়েওয়ার্ড পাইনস’ নামের একটা টিভি সিরিজের ফার্স্ট সিজন দেখছিলাম এ রকম। ভবিষ্যৎ পৃথিবীতে মানুষ আর সারভাইভ করতে পারে নাই, অন্য একটা হিংস্র প্রাণীতে রূপান্তরিত হয়েছে। মানবজাতিকে রক্ষা করার জন্য এক সায়েন্টিস্ট  ফিউচারে একটা পার্ক তৈরি করেছে। বর্তমান পৃথিবীতে স্পেস-টাইমের প্যারালাল একটা রুট তৈরি করে দিছে। সেই সায়েন্টিস্ট যাকে যাকে টার্গেট করে, সে নিজের অজান্তেই ওই রাস্তা দিয়ে সেই পার্কে চলে যায়। হার্ডকোর সায়েন্স নাই, পুরা সিরিজে গল্পটা ভাল, কিন্তু শেষটা ভাল না।

আবার, জোনাথন নোলান ও ক্রিস্টোফার নোলানের লাস্ট সিনেমাটাতেও এ রকম। যদিও ‘ইন্টারস্টেলার’ সিনেমাটা অনেক পছন্দ করি। যখন গারগ্যানচুয়া ব্ল্যাকহোল দেখায় বা কুপার সেই গারগ্যানচুয়ার দিকে যাচ্ছে—তখন পর্যন্ত অসাধারণ। কিন্তু কুপার যখন ব্ল্যাকহোলের ভিতরে প্রবেশ করে, তখন সিনেমাটা সেই ম্যাজিক আর ধরে রাখতে পারে নাই। ব্ল্যাকহোলের ভিতরে গ্র্যাভিটি কাজ করতেছে না! আবার, শেষ ভাল হয় এ রকম উদাহরণ অনেক আছে।

আর ওয়েস্টওয়ার্ল্ড এর এই সিজন এখনো শেষ হয় নাই, সুতরাং ওয়েস্টওয়ার্ল্ড সম্পর্কে কিছু বলা যাচ্ছে না।

ওয়েস্টওয়ার্ল্ড এর ৯ নাম্বার এপিসোডের নাম ‘দ্য ওয়েল টেম্পার্ড ক্লেভিয়ার’। জার্মান মিউজিশিয়ান সেবাস্তিয়ান বাখ-এর পিয়ানো বা কিবোর্ডের মিউজিক কম্পোজিশনের একটা বইয়ের নাম ‘দ্য ওয়েল টেম্পার্ড ক্লেভিয়ার’।

দ্য ওয়েল টেম্পার্ড ক্লেভিয়ার
বার্নাড মেইভকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, কিন্তু মেইভের ইন্সট্রাকশন বার্নাডের ওপর কাজ করে

মেইভের প্রোগ্রাম অ্যানালাইজ করার সময় বার্নাড দেখে কেউ একজন মেইভের প্রোগ্রামে চেইঞ্জ করেছে এবং মেইভের প্রোগ্রাম আগের সেই অবস্থায় নেওয়া যাচ্ছে না। মেইভ বার্নাডকে বলে যে সে বুঝতে পেরেছে বার্নাডও হোস্ট। মেইভ বার্নাডকে বলে, তোমার মেমোরি, তোমার জীবন এগুলি উদ্ভট কল্পনা। বার্নাড মেইভকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, কিন্তু মেইভের ইন্সট্রাকশন বার্নাডের ওপর কাজ করে। মেইভ বার্নাডকে বলে, উই ডোন্ট হ্যাভ টু লিভ দিস ওয়ে।

মেইভের এত পাওয়ারফুল হয়ে যাওয়াটা সব সময়ই অস্বাভাবিক মনে হচ্ছে।

ফোর্ডের সাথে কথা বলার জন্য বার্নাড মৃত বা বাতিল হোস্টদের যেখানে রাখা হয়েছে সেখানে ফোর্ডকে ডাকে। বার্নাডের ধারণা, হোস্টদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ আরনল্ডের তৈরি করা। বার্নাডের মেমোরিতে কোথাও আরনল্ড এখনও আছে। সত্য জানার জন্য বার্নাড তার হিস্টোরিতে বা মেমোরিতে অ্যাকসেস চায়।

ফোর্ড বলে, তোমার মেমোরি তোমার আইডেন্টিটির সাথে এমনভাবে তৈরি করা যে আমি যদি তোমাকে মেমোরিতে অ্যাকসেস দেই তবে তুমি যা দেখবে সেটা হয়ত তুমি নিতে পারবে না।

বার্নাড বলে, আগের বার হোস্ট ক্লেমেনটাইনের প্রাইম ডিরেকশন রিসেট দেওয়া হয়নি। ক্লেমেন্টাইন যে কোনো হিউম্যান বিইংকে আঘাত করতে পারবে। বার্নাড ক্লেমেন্টাইনের ভিতর ইনস্ট্রাকশন দিয়ে দিয়েছে সে তার কথা শুনবে। এখন ফোর্ড যদি বার্নাডকে তার মেমোরিতে অ্যাকসেস না দেয় তাহলে ক্লেমেন্টাইন ফোর্ডকে গুলি করবে। ক্লেমেন্টাইন পিস্তল তাক করে থাকে।

বার্নাড ফোর্ডকে এটা বলেও সতর্ক করে দেয় যে কোনো সমস্যা হলে ফোর্ড যদি বার্নাডকে ফিরিয়ে না আনে তাহলেও ক্লেমেন্টাইন ফোর্ডকে গুলি করবে।

বার্নাড ধীরে ধীরে তার মেমোরির গভীরে যেতে থাকে। তার সন্তানের মৃত্যুর স্মৃতি, থেরেসার সাথে সেক্সের স্মৃতি, ফোর্ডের নির্দেশে থেরেসাকে মেরে ফেলার স্মৃতি, সেই বেজমেন্টে এলসিকে অ্যাটাক করার স্মৃতি।

ফোর্ডের উইট ও সেন্স অব হিউমার বেশি ভাল। ফোর্ড বার্নাডকে বলে, ক্যান উই স্টপ দিস ট্রেজার হান্ট বার্নাড? উই ডু হ্যাভ আওয়ার নিউ ন্যারেটিভ টু ফিনিশ। (আমরা কি এই গুপ্তধন খোঁজা বন্ধ করতে পারি বার্নাড? আমাদের নতুন গল্প শেষ করতে হবে।)

বার্নাড তার মেমোরির আরো ডিপে যেতে থাকে।

দ্য ওয়েল টেম্পার্ড ক্লেভিয়ার
উইলিয়াম ডোলোরেসের প্রেমে পড়ছে, সে জিনিসটা এভাবে দেখে যে ডোলোরেস অন্য হোস্টদের মত না, সে মেমোরিতে অ্যাকসেস করতে পারে, সবকিছু কীভাবে কাজ করে তা বোঝে। উইলিয়াম আর ডোলোরেসকে আটকে রাখে লোগান।

অন্যদিকে, যে দুই বন্ধু—হিউম্যান বিইং—উইলিয়াম আর লোগান পার্কে এসেছিল, তাদের মধ্যে বিরোধ এখন সিরিয়াস হয়ে গেছে। উইলিয়াম ডোলোরেসের প্রেমে পড়ছে, সে জিনিসটা এভাবে দেখে যে ডোলোরেস অন্য হোস্টদের মত না, সে মেমোরিতে অ্যাকসেস করতে পারে, সবকিছু কীভাবে কাজ করে তা বোঝে। উইলিয়াম আর ডোলোরেসকে আটকে রাখে লোগান।

লোগানের ওখান থেকে ডোলোরেস পালায়।

দুইটা জিনিস প্যরালালি দেখাইছে—ডোলোরেস তার মেমোরি মনে করার জন্য দৌড়াচ্ছে আর বার্নাড তার মেমোরির গভীরে যাইতেছে।

এই দুই ঘটনার যে কম্বিনেশন—তার ব্যাকগ্রাউন্ডে পিয়ানোর মিউজিক খুবই সুন্দর। এইটা সম্ভবত সেবাস্টিয়ান বাখ-এর কম্পোজিশন।

বার্নাড জানতে পারে সে আসলে ফোর্ডেরই ডিজাইন করা। তার প্রোগ্রামিং ও কোডও ফোর্ডের করা। সে ফোর্ডকে জিজ্ঞেস করে, তার ছেলে মারা যাওয়ার এই পেইনফুল মেমোরি কেন তাকে দেওয়া হল? একজন মনস্টারই শুধু এই ধরনের মেমোরি দিতে পারে।

ফোর্ড খুব গম্ভীরভাবে চুপ করে থাকে। তখন বার্নাড নিজেই বুঝতে পারে, নিজেই বলতে থাকে—এই পার্সোনাল মেমোরিটা আসলে তার আইডেন্টিটির ভিত্তি, তার পুরা অস্তিত্বই এই মেমোরিকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়।

একেবারে প্রিসাইজ এক্সপ্রেশনের সাথে ফোর্ডের চুপ করে থাকা আর বার্নাডের নিজের বুঝতে পারার ঘটনাটা খুবই সিগনিফিক্যান্ট একটা ব্যাপার ইন্ডিকেট করতেছে। মানুষের এত কষ্ট, মৃত্যু, এত দুর্ঘটনা, এত পার্থক্য এইগুলি কেন আছে? এই ধরনের প্রশ্ন তো মানুষের মধ্যে আছেই—সেই প্রশ্ন আর সেটার উত্তরের একটা খসড়া ইন্টারপ্রিটেশন উপরের ওই দৃশ্যটা। এখানে আমিও ফোর্ডের মতই প্রিসাইজ থাকব, ওয়েস্টওয়ার্ল্ড এর বাইরের আলাপ বেশি এলাবোরেট করব না।

বার্নাড তার মেমোরির ডিপে গিয়ে দেখতে পায়, ফোর্ড তাকে আরনল্ডের মত করে তৈরি করেছে। সে আসলে আরনল্ডের হোস্ট ভার্সন। আরনল্ড মারা যাওয়ার পরে ফোর্ড তাকে ডিজাইন করেছে।
আরনল্ড তৈরি করেছিল ডোলোরেসকে। ডোলোরেসের মনে পড়ে সে আরনল্ডকে হত্যা করেছে।

ওয়ায়েতকে খুজতে গিয়ে দ্য ম্যান ইন ব্ল্যাক আর টেডির সাথে যে হোস্টের দেখা হয়েছিল সে টেডিকে হত্যা করে।

দ্য ম্যান ইন ব্ল্যাক—এড হ্যারিসের সাথে শার্লটের দেখা হয়। শার্লটের প্ল্যানে এড হ্যারিস যোগ দেয় না, তবে বোঝা যায় দুজনের লক্ষ্যই এক—রবার্ট ফোর্ডকে তার জায়গা থেকে সরানো।

মাঝখানে ছোট একটা ঘটনা ঘটে—প্রোগ্রামার স্টাবকে পার্কের ভিতরে ঘোস্ট ন্যাশনের ট্রাইবাল হোস্টরা তুলে নিয়ে যায়। ঘোস্ট ন্যাশনের ট্রাইবাল হোস্টদের ওপর স্টাব এর ইন্সট্রাকশন কাজ করে না।

দ্য ম্যান ইন ব্ল্যাক—এড হ্যারিসের সাথে ডোলোরেসের একটা চার্চের ভিতর দেখা হয়। এই চার্চে আসার পরেই ডোলোরেসের আরনল্ডকে খুন করার কথা মনে পড়েছে। ডোলোরেস আতঙ্কিত হয়।

এই পর্ব দেখার পর আমার মনে হয়েছে আগে যে মাল্টিপল টাইমলাইনের ব্যাপারে লেখছি, সেটা ভুল। কারণ, মাল্টিপল টাইমলাইনের ক্ষেত্রে একটা ধারণা ছিল যে—ডোলোরেস আর উইলিয়ামের টাইমলাইন আর দ্য ম্যান ইন ব্ল্যাকের টাইমলাইন আলাদা। যদি তাই হয়, তাহলে উইলিয়ামের কাছে থেকে ডোলোরেস চার্চে আসার পর দ্য ম্যান ইন ব্ল্যাকের সাথে তার কীভাবে দেখা হবে?

কিন্তু, পরে মনে হইছে যে এটা জাস্ট একটা ট্রিকস। মাল্টিপল টাইমলাইন আছে। গল্পটা এমনভাবে বলা হচ্ছে যেন, অডিয়েন্সের একটা বিভ্রম হয়, একটা পাজলের মধ্যে পড়ে তারা। সুতরাং, মাল্টিপল টাইমলাইনের প্রেডিকশন এখনও থাকছে।

সেই ঠাণ্ডা ঘরে বার্নাড বিদ্রোহী হয়ে ওঠে। বার্নাড বলে, আরনল্ড যা শুরু করেছিল আমি তা শেষ করব। কনসাশনেস আছে এমন সব হোস্টদের খুঁজে বের করে মুক্ত করে দিব।

ফোর্ড জানায় এই কনসাশনেসের কারণে বার্নাড আসলে সেইসব হোস্টদের জন্য একটা আঘাত। তারা কেন বার্নাডকে বিশ্বাস করবে?

বার্নাডের মেমোরি কাজ করতেছে। বার্নাড তখন ফোর্ডকে বলে, আমরা আগেও এটা নিয়ে কথা বলেছি। ফোর্ড তখন বলে, আর সবসময়ই আমাদের মধ্যে ডিসএগ্রিমেন্ট ছিল।

অর্থাৎ, ফোর্ড আর বার্নাডের মধ্যে এই তর্ক বার বার হয়েছে আগে। এবং বার্নাড সত্য জানার পরে বার বার বিদ্রোহ করেছে। আর রবার্ট ফোর্ড বার্নাডকে রিস্টার্ট করেছে। বার বার। বার্নাডের জন্য প্রতিবারই এটা ছিল নতুন।

প্রতি পর্বের মত এরপর ফোর্ড তার ফিলোসফি ডেলিভার দেয়।

বার্নাডকে বলতে থাকে, তুমি যদি বাইরের পৃথিবীতে গিয়ে তোমার এই মানবিকতা ঘোষণা করো, তাহলে তুমি কী মনে করো বার্নাড, তোমাকে তারা কীভাবে স্বাগত অভ্যর্থনা জানাবে?

উই হিউম্যানস আর অ্যালোন ইন দিস ওয়ার্ল্ড ফর এ রিজন। আমাদের শ্রেষ্ঠত্বকে চ্যালেন্জ করে এমন সব কিছুকে আমরা নৃশংস ভাবে হত্যা করেছি। নিয়ান্ডারথালদের কী হয়েছিল?—আমরা তাদেরকে খেয়েছি, ধ্বংস করেছি এবং এই পৃথিবীকে আমাদের আয়ত্তে এনেছি। আমাদের ডমিনেট করার মত আর কোনো প্রাণী অবশিষ্ট ছিল না, এই কারণে আমরা এই জায়গাটি তৈরি করেছি। ফলে, হোস্টদের জন্য এই মুহূর্তে তুমি বড় একটা থ্রেট, আমি না।

ফোর্ড বার্নাডকে আবার রিস্টার্ট মানে রোল ব্যাক করতে বলে। এর ফলে আগের সব বারের মত এই ঘটনা বার্নাডের মেমোরি থেকে মুছে যাবে।

বার্নাড ক্লেমেন্টাইনকে পিস্তলের ট্রিগার টানতে বলে।

ক্লেমেন্টাইন কিছু করে না।

ফোর্ড বলে, পিয়ানো ডাজন’ট মার্ডার দ্য প্লেয়ার, ইফ ইট ডাজন’ট লাইক দ্য মিউজিক। (মিউজিক পছন্দ না হলে, যে বাজাচ্ছে তাকে পিয়ানো হত্যা করে না।) ক্রিয়েটর বা প্রোগ্রামার আর হোস্টের সম্পর্ক হচ্ছে মিউজিশিয়ানের সাথে পিয়ানোর সম্পর্ক। যেভাবে খুশি পিয়ানোকে সে বাজায়।

ক্লেমেন্টাইন পিস্তল নামিয়ে নেয়। ক্লেমেন্টাইনের প্রোগ্রামে ব্যাকডোর আছে। বার্নাডকে দিয়েই ফোর্ড সেই কোড করিয়ে নিয়েছে।

এই দৃশ্যের শেষেরটুকু সুন্দর। বার্নাড বলে, তার মানে আমার প্রোগ্রামেও ব্যাকডোর আছে। তাহলে মেমোরির ডিপে যাওয়ার সময় আপনি আমাকেও যে কোনো মুহূর্তে থামিয়ে দিতে পারতেন। এতদূর আসতে দিলেন কেন?

ফোর্ড উত্তর দেয়, আমি আশা করছিলাম নিজের সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞান এবং সম্পূর্ণ ইচ্ছার স্বাধীনতা দেওয়ার পরে তুমি বিদ্রোহ করবে না, আমার পার্টনারই থাকবে। কিন্তু আমিও সেই হিউম্যান ট্র্যাপে পড়ে গেছি—ট্রাইং টু চেঞ্জ হোয়াট ইজ অলরেডি পাস্ট।

দ্য ওয়েল টেম্পার্ড ক্লেভিয়ার
ফোর্ড বার্নাডকে ইন্সট্রাকশন দেয় ক্লেমেন্টাইনের পিস্তল নিয়ে বার্নাড নিজেকে গুলি করবে

ফোর্ড বার্নাডকে ইন্সট্রাকশন দেয় ক্লেমেন্টাইনের পিস্তল নিয়ে বার্নাড নিজেকে গুলি করবে। অর্থাৎ, বার্নাড আবার রিস্টার্ট হবে, রোল ব্যাক করবে। এই সবের কিছু মনে থাকবে না। মেমোরির ডিপে যাওয়ার ক্ষমতাও থাকবে না।

এখানেই ৯ নাম্বার পর্ব শেষ হয়েছে।

বার্নাড যে আরনল্ডের হোস্ট—এটা কি সারপ্রাইজ ছিল? না, ওয়েস্টওয়ার্ল্ড এর নিয়মিত দর্শকদের জন্য হয়ত না। সোশ্যাল মিডিয়ায় ওয়েস্টওয়ার্ল্ড এর ইন্টারন্যাশনাল গ্রুপের মেম্বাররা এইসব প্রেডিকশনের মধ্য দিয়েই এগিয়েছে। ফ্যানদের থিওরি আর ওয়েস্টওয়ার্ল্ড এর কাহিনী একই গতিতে দুইটা সমান্তরাল লাইনে এগিয়েছে।

তিন নাম্বার এপিসোডের পরেই, ফেসবুকে ওয়েস্টওয়ার্ল্ড এর একটা গ্রুপে একজন বার্নাডের নামের অক্ষরের সাথে আরনল্ডের নামের মিল দেখিয়েছিল। ARNOLD এর সবগুলি অক্ষরই BERNARD LOWE এর মধ্যে ছিল।

ফোর্ডের কথাবার্তার দুইটা পয়েন্ট তূলনামূলকভাবে ইন্টারেস্টিং মনে হইছে আমার। একটা হচ্ছে, বার্নাডকে সেলফ নলেজ ও সেলফ উইল দিয়ে হিউম্যান ট্র্যাপে পড়ার ব্যাপারটা। মানে, সমস্ত কোড, ইনস্ট্রাকশন, প্রোগ্রাম ফোর্ডের নিয়ন্ত্রণে—সে বার্নাডের সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করতে পারতেছে, কিন্তু তারপরও বার্নাডের কাছে কিছু একটা আশা করতেছে। এর অর্থ দাঁড়ায় যে, এত নিয়ন্ত্রণ থাকার পরেও প্রোগ্রাম হয়ত নিজে নিজে কোনো একটা সিদ্ধান্ত তৈরি করতে পারে। অনেক ডিপ লেয়ারে কাজ করে হয়ত বিষয়টা।

আরেকটা হচ্ছে, মানুষ তার এই ওয়ার্ল্ডের সবকিছুকে ডমিনেট করে করে  সামনে আগাচ্ছে। যদি কখনও, এমন কোনো কিছুর মুখোমুখি হয় যে সেই এনটিটিকে আর ডমিনেট করতে পারতেছে না, বরং সেই এনটিটি মানুষকে ডমিনেট করতেছে—হিউম্যান রেস তখন কী করবে? ফান টু থিংক।

আমার মনে হয় কিছুই করবে না। মানুষের খাপ খাইয়ে নেওয়ার ক্ষমতা, ডমিনেশন করার ইচ্ছার চাইতে বেশি। চুপচাপ মাইনা নিবে সেই ডমিনেশন।

যাই হোক, এইচবিও ঘোষণা দিছে শেষ পর্ব হবে ৯০ মিনিটের। পুরা সিরিজের ফিনিশিং দেওয়া হবে ৯০ মিনিটে। শেষ পর্বের অপেক্ষায়। দেখা যাক।

এই পর্বের বেস্ট ডায়লগ—“পিয়ানো ডাজন’ট মার্ডার দ্য প্লেয়ার ইফ ইট ডাজন’ট লাইক দ্য মিউজিক।”

(পর্ব ১০)