আপনি হয়তো ঘুমানোর জন্যে বিছানায় গড়াগড়ি করছেন বা ভেড়া গুনছেন কিংবা হয়ত ঘুমানোর আগে এক গ্লাস গরম দুধ খেয়ে নিয়েছেন—কিন্তু কোনো কৌশলই কাজ করছে না!

ঘুমের ব্যাপারে  আশার কথা শুনিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ডাক্তার এন্ড্রু ওয়েইল। তিনি এমন একটি কৌশল আবিষ্কার করেছেন যা আপনাকে এক মিনিটে ঘুমিয়ে পড়তে সাহায্য করবে। আসলেই তাই।

প্রাণায়াম ও যোগব্যায়ামের উপর ভিত্তি করে তিনি এই কৌশলটি তৈরি করেছেন।

তিনি এর নাম দিয়েছেন ৪-৭-৮।

ঘুম
কভারে অ্যান্ড্রু ওয়েইল, ২০০৫

শ্বাস-প্রশ্বাসের কিছু ব্যায়াম অনুসরণ করে দেহের অক্সিজেনের পরিমাণ নিয়ন্ত্রন করাই হচ্ছে এই পদ্ধতির মূলমন্ত্র।

উচ্চ রক্তচাপ, প্যানিক অ্যাটাক বা হঠাৎ আতঙ্কিত হয়ে যাওয়া, এমনকি মধ্যরাতে হঠাৎ ক্ষুধা পাওয়া এই ধরনের সমস্যাও এই কৌশলের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

 

যেভাবে এই কৌশলটি কাজ করে

প্রথমে ঘুমানোর জন্য নিজেকে মানসিক এবং শারীরিকভাবে প্রস্তুত করতে হবে। এরপর জ্বিহ্বা দিয়ে উপরের পাটির সামনের দাঁতের পেছনে চাপ দিয়ে রাখুন এবং নাক দিয়ে শ্বাস নিন।

এই শ্বাস নেবার সময় ১ থেকে ৪ পর্যন্ত গুনতে থাকুন। পরে ৭ সেকেন্ড পর্যন্ত আপনার শ্বাস আটকে রাখুন এবং আট পর্যন্ত গোনার মধ্য দিয়ে নিঃশ্বাস আস্তে আস্তে ছেড়ে দিন।

মুখ দিয়ে নিঃশ্বাস ছাড়তে হবে। আর জিহ্বা দিয়ে এই শ্বাস-প্রশ্বাসের গতিকে নিয়ন্ত্রণ করুন।

এভাবে পর পর বার বার একই কাজ করার মাধ্যমে এক সময় আপনি ঘুমিয়ে পড়বেন।

ধীরে ধীরে শ্বাস গ্রহণ করলে আমাদের  অক্সিজেন গ্রহণের পরিমাণ বেড়ে যায়।  ৭ সেকেন্ড শ্বাস ধরে রাখার ফলে অক্সিজেন সারা শরীরে মিশে যেতে থাকে। আর নিয়ন্ত্রিতভাবে নিঃশ্বাস ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ফুসফুসে ‘ব্যবহৃত’ বাতাস সম্পূর্ণভাবে বেরিয়ে আসে।

দেখা গেছে এই কৌশল ব্রেইন ও নার্ভকে শান্ত করে, আমাদের পালস বা নাড়ি স্পন্দনের গতি কমিয়ে আনে। এর প্রভাবে আমাদের শরীরে এক ধরনের প্রশান্তির সৃষ্টি হয়। ফলে আমরা অাশ্চর্যজনকভাবে ঘুমিয়ে পড়ি।

 

প্রতিদিনের এক্সারসাইজ

এন্ড্রু ওয়েইল পরামর্শ দিয়েছেন দিনে অন্তত দুইবার, সকালে ও বিকালে এই পদ্ধতি অনুসরণ করা উচিত।

শুরু করার ৮ সপ্তাহ পরে আপনি নিঃশ্বাসের এই এক্সারসাইজটি বাড়িয়ে দিনে চার থেকে আটবার করতে পারেন। যখন আপনি এই নিয়ন্ত্রিত শ্বাস-প্রশ্বাসের কৌশলে অভ্যস্ত হয়ে যাবেন, আপনি অনেক তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়বেন। আপনার ঘুম আরও ভাল হবে এবং এই ভালো ঘুম এর প্রভাবে আপনার জীবন আরও শান্তিময় ও সুন্দর হয়ে উঠবে।