নতুন গবেষণায় বিজ্ঞান আমাদের জানিয়েছে স্ট্রেস তো ক্ষতিকর নয়ই বরং কঠিন মুহূর্তে স্ট্রেস আমাদের কর্মশক্তির মূল্যবান উৎস হিসেবে কাজ করে।

অতিরিক্ত স্ট্রেস বা মানসিক চাপ থেকে হার্টের অসুখ পর্যন্ত হতে পারে। ঘুম কমে যেতে পারে, শরীরের আরো অনেক ক্ষতি হতে পারে। এই কথাগুলি আমরা সবাই শুনেছি।

এমন যদি হয় স্ট্রেসকে সঠিকভাবে ব্যবহার করে আমরা জীবনকে আরো আনন্দের, আরো সফল করতে পারি, স্বাস্থ্য আরো উন্নত করতে পারি? মাইন্ডসেট ও রেজিলিয়েন্স (সহন ক্ষমতা) নিয়ে কাজ করেন ডঃ কেলি ম্যাকগনিয়াল। তিনি প্রমাণ করেছেন মানুষের জন্য স্ট্রেস বা মানসিক চাপ অতটা খারাপ নয়। তবে আপনি যদি মনে করেন স্ট্রেস আপনার জন্য খারাপ, এই বিশ্বাসই আপনার ক্ষতির কারণ হতে পারে। প্রকৃত অর্থে স্ট্রেসে থাকার বেশ কয়েকটি উপকার আছে। স্ট্রেস আমাদের আরো মনোযোগী ও আরো উদ্যমী করে তোলে। নিজেদের পারস্পরিক সম্পর্ক দৃঢ় করতেও রাখতে পারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।


ডেভিন লি
ডিপ স্ট্যাশ
অনুবাদ: আমিন আল রাজী


ম্যাকগনিয়াল তার বইতে পাঠকদের দেখিয়েছেন স্ট্রেস মেনে নেয়ার মানসিকতা কীভাবে তৈরি করতে হয়। আমাদের মস্তিষ্কের, চ্যালেঞ্জিং অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নেয়ার স্বাভাবিক ক্ষমতা আছে।

এই অভিজ্ঞতা সাধারণ প্রাত্যহিক অভিজ্ঞতাও হতে পারে, আবার জীবন বদলানো কোনো অভিজ্ঞতাও হতে পারে।

স্ট্রেস
২০১৫ সালের ৫ মে বইটি প্রকাশিত হয়

ম্যাকগনিয়াল তার বই ‘দ্য আপসাইড অফ স্ট্রেস’ এ স্ট্রেস কমানোর জন্য কোনো গাইড লাইন দেননি। বরং বইটিতে স্ট্রেসের সাথে আমাদের সম্পর্ক আরো ভালো করার উপায় দেয়া আছে। আমরা যাতে জীবনে স্ট্রেস মেনে নিতে পারি, স্ট্রেসকে আরো ভালোভাবে বুঝতে পারি এবং নিজেদের কাজে লাগাতে পারি সে বিষয়ে বইটি আমাদের সাহায্য করবে।

বইটির মূল পয়েন্ট

  • স্ট্রেস ক্ষতিকর তাদের জন্যই, যারা মনে করেন তারা স্ট্রেসে আছেন
  • স্ট্রেস বিষয়ে যাদের মনোভাব ইতিবাচক তারা সুস্বাস্থ্য উপভোগ করেন এবং সুখী থাকেন
  • আমরা যখন স্ট্রেস এড়ানোর চেষ্টা করি তখনই এর অধিকাংশ ক্ষতিকর প্রভাব দেখা দেয়
  • আপনি চাইলে স্ট্রেস মোকাবেলার উপায় শিখতে পারেন
  • স্ট্রেস আপনার মধ্যে আরো কর্মশক্তি ও আত্মবিশ্বাস তৈরি করে এবং অন্যদের সাথে সম্পর্ক ভালো করে
  • আপনি সেই বিষয়েই স্ট্রেসে থাকেন যেটা আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ
  • জীবনের অর্থ খুঁজে পেতে চাইলে আপনাকে স্ট্রেসের মুখোমুখি হতেই হবে
  • স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে অন্যদের সাথে যুক্ত থাকা এবং একে অপরকে সাহায্য করা

উপকারেও আসতে পারে স্ট্রেস

অধিকাংশ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বলবে স্ট্রেসে থাকা বিপদজ্জনক। তাদের মতে স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণে না থাকলে হৃদযন্ত্রের অসুখ হতে পারে, বিষন্নতা ও আসক্তি তৈরি হতে পারে। তাই বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন স্ট্রেস কমানোর।

তবে সম্প্রতি বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে স্ট্রেস আমাদেরকে আরো স্মার্ট, সফল ও শক্তিশালী করে তুলতে পারে।

স্ট্রেসকে স্বাগত জানান

গত তিন দশক ধরে চলা গবেষণায় বের হয়ে এসেছে স্ট্রেস আমাদের এমন কিছু উপকার করে যেসব আগে অজানা ছিল। গবেষণার ফলাফল আমাদের জানিয়েছে স্ট্রেস আত্মবিশ্বাস বাড়ায়, স্মার্ট বানায় এবং আরো সহানুভূতিশীল করে তোলে। এমন কি স্বাস্থ্যের উপকারেও আসে স্ট্রেস। তাই স্ট্রেসকে লড়াই করে নয় বরং আলিঙ্গন করেই এর মুখোমুখি হতে হবে।

আমাদের সবচেয়ে মূল্যবান কিছু যখন ঝুঁকিতে পড়ে তখনই আমাদের মধ্যে স্ট্রেস তৈরি হয়। ১৯৩০ সালে ইঁদুরের ওপরে করা এক গবেষণা থেকে স্ট্রেসের কুফল সম্পর্কে মানুষ জানতে পারে।

আরো পড়ুন: যে কৌশলে একজন অলস লোক তার প্রতিদিনের কাজগুলি শেষ করতে পারে

তবে নতুন গবেষণা থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন ফলাফল পাওয়া যায়। এখানে দেখা যায় প্রাত্যহিক জীবনের স্ট্রেস এতো মারাত্মক বা ক্ষতিকর কিছু নয়।

আমাদের পূর্বসূরীদের জীবনে স্ট্রেস: দ্য মিসম্যাচ থিওরি

কর্মস্থলে আমরা যে স্ট্রেসে থাকি, সভ্যতার ইতিহাসে আমাদের পূর্ব পুরুষরা তার চেয়ে অনেক বেশি ভয়ংকর পরিবেশ থাকত। মানুষের এখনকার বাস্তবতার সাথে আর তাদের বিবর্তন থেকে লাভ করা শিক্ষার মধ্যে কোনো মিল নেই।

স্ট্রেস
নতুন গবেষণায় বিজ্ঞান আমাদের জানিয়েছে স্ট্রেস তো ক্ষতিকর নয়ই বরং কঠিন মুহূর্তে স্ট্রেস আমাদের কর্মশক্তির মূল্যবান উৎস হিসেবে কাজ করে।

আদিকাল থেকেই বিপদের সময় আমরা ফাইট অর ফ্লাইট রেসপন্স দেখাই। এর অর্থ মারো নয়তো পালাও প্রতিক্রিয়া। এই প্রতিক্রিয়ার সময় আমাদের মধ্যে মানসিক চাপ তৈরি হয়, হার্টবিট বেড়ে যায়, মাংসপেশী সংকুচিত হয় এবং অ্যাড্রেনালিন হরমোন নির্গত হয়। এই সময় আমাদের পূর্বসূরীরা শিকারি প্রাণীদের সাথে হয় যুদ্ধ করত অথবা পালিয়ে যেত। মিসম্যাচ থিওরি বিপদের সময় আমাদের এই ধরনের মানসিক চাপের কথা বলে। কিন্ত বিবর্তন তো প্রতিনিয়ত বদল হয়।

দ‌্য চ্যালেঞ্জ রেসপন্স বা চ্যালেঞ্জ প্রতিক্রিয়া

আমাদের বুদ্ধিমান মস্তিষ্ক সঠিকভাবে বুঝতে পারে কোনটা শিকারি সিংহ আর কোনটা কাজের ডেডলাইন। ডেডলাইনের মতো কম মারাত্মক ঝুঁকির সামনে যখন আমরা পড়ি, আমাদের শরীর ‘চ্যালেঞ্জ’ নামের প্রতিক্রিয়াটি দেখায়। এই সময় এমন সব হরমোন তৈরি হয় যা আমাদের আত্মবিশ্বাস, মনোযোগ ও অনুপ্রেরণা বাড়াতে সাহায্য করে। তাই এই পরিস্থিতিতে আপনি আরো আত্মপ্রত্যয়ী, আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠেন।

দ্য টেন্ড অ্যান্ড বিফ্রেন্ড রেসপন্স বা বন্ধুসুলভ প্রতিক্রিয়া

এই ধরনের প্রতিক্রিয়ার সময় শরীরে অক্সিটোসিন হরমোন নির্গত হয়। এই হরমোন অন্যদের সাথে অনুভূতিমূলক সম্পর্ক তৈরিতে আমাদের সাহায্য করে। অক্সিটোসিন আক্রমণ করার মানসিকতা দমন করে। বরং চাপ মোকাবেলার জন্য আমাদের সাহসের উৎস হিসেবে কাজ করে।

তাই আপনি অন্যদের সাহায্য নেয়ার ‌ও অন্যদের সাহায্য করার জন্য আরো প্রস্তুত থাকেন। অক্সিটোসিন হরমোন হৃদপিন্ডের জন্য যথেষ্ট উপকারী। এই হরমোনের প্রভাবে হৃদপিণ্ড আরো নতুন কোষ তৈরি করে এবং ছোটখাটো ক্ষতি সে নিজেই সারিয়ে তুলতে পারে।

স্ট্রেসের উপকার

নতুন গবেষণায় বিজ্ঞান আমাদের জানিয়েছে স্ট্রেস তো ক্ষতিকর নয়ই বরং কঠিন মুহূর্তে স্ট্রেস আমাদের কর্মশক্তির মূল্যবান উৎস হিসেবে কাজ করে। কারণ স্ট্রেসের প্রতিক্রিয়াতে আমাদের কাজের পারফর্মেন্স ভালো হয়। স্ট্রেসে থাকা অবস্থায় অনেক সময়ই ব্যবসায়ীরা আরো ভালো দর কষাকষি করতে পারে, ছাত্ররা পরীক্ষায় ভালো করে, অ্যাথলেটরা প্রতিযোগী মানসিকতা দেখায়, সার্জনরা তাদের কাজে আরো নিপুণ হয় এবং পাইলটরা জরুরি অবস্থা আরো ভালো সামলাতে পারে।

স্ট্রেসের সময় মনোযোগ কীভাবে বেড়ে যায়

মনে করুন আপনাকে বক্তৃতা দিতে বলা হলো। বেশির ভাগ মানুষের মতো আপনার মধ্যে নার্ভাস হওয়ার লক্ষণ দেখা দেবে। আপনার মুখ শুকিয়ে যাবে, হাত পা’য়ের তালু ঘামাবে এবং হার্টবিট বেড়ে যাবে। অনেকে মনে করে এ অবস্থায় ঠিকভাবে বক্তৃতা দেয়ার জন্য আগে নিজেকে শান্ত করে নার্ভাস ভাব কমাতে হবে। এই চিন্তা সঠিক নয়। কঠিন মুহূর্তে স্ট্রেস বরং আমাদের বন্ধুর ভূমিকা পালন করে।

আরো পড়ুন: সাকসেসফুল ডেলিগেশন: অন্যদের দিয়ে কাজ করাবেন কীভাবে?

আমরা যেটাকে নার্ভাস ভাব বা উদ্বিগ্নতা বলছি আসলে সেটা চ্যালেঞ্জ প্রতিক্রিয়ার ফলাফল। আর এই সময় আমাদের ফোকাস অনেক বেড়ে যায়। আমরা খুব দ্রুত চিন্তা করতে পারি। এমন কি আমরা চোখেও ভালো দেখি, কারণ আমাদের চোখের পিউপিল (যে অংশ দিয়ে আলো প্রবেশ করে) বড় হয়ে যায়।

কোন অবস্থাকে আমরা স্ট্রেস বা মানসিক চাপ বলব?

আমরা কখন স্ট্রেসে থাকি? আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ, এমন কিছুতে সমস্যা হলেই আমরা মানসিক চাপ বা স্ট্রেস অনুভব করি। নিজের নীতি বা মূল্যবোধ রক্ষা করে কাজ করতে গেলে এমন চাপ তৈরি হবেই। তার মানে স্ট্রেসে থাকা মানে খারাপ থাকা, তা কিন্ত মোটেই না।

স্ট্রেস
স্ট্রেসকে লড়াই করে নয় বরং আলিঙ্গন করেই এর মুখোমুখি হতে হবে।

আপনি কখনোই স্ট্রেস ছাড়া একটা বড় লক্ষ্য (যেমন মাউন্ট এভারেস্ট এর চূড়ায় ওঠা) পূরণ করতে পারবেন না। বড় চ্যালেঞ্জের পূরণে কষ্ট আসবেই, আর সেটাকে মেনে নিতে হবে। কারণ লক্ষ্য পূরণ করাই হচ্ছে আসল। পাহাড়ে উঠতে গেলে যখন আমরা ঠান্ডায় জমে যাই বা পরের পাহাড়ে ওঠার কথা ভেবে যখন ভয় হয় তখন কিন্ত নিজেকে ব্যর্থ মনে হয় না। আমরা যখন মানসিক চাপ এড়াতে চাই, স্ট্রেস কাজে লাগাতে পারি না তখনই আমাদের কাছে স্ট্রেসে থাকা ব্যর্থতার চিহ্ন বলে মনে হয়।

স্ট্রেস এড়াবেন না

গবেষণায় একাধিকবার প্রমাণিত হয়েছে, স্ট্রেস মোকাবেলা করার চেয়ে স্ট্রেস এড়ানো আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য বেশি ক্ষতিকর। জাপানে করা এক স্টাডিতে দেখা যায়, যে শিক্ষার্থীরা মানসিক চাপ এড়িয়ে চলতে চায়, সমাজের প্রতি তাদের মনোভাব নেতিবাচক থাকে।

আরো পড়ুন: টাইম ম্যানেজমেন্ট এর জন্য সবচেয়ে প্রোডাক্টিভ ব্যক্তিরা যে ১৩টি টেকনিক ব্যবহার করেন

জুরিখে আরেকটা গবেষণায় উঠে আসে, যেসব শিক্ষার্থী পড়ার চাপ কমানোর জন্য সবচেয়ে বেশি চেষ্টা করে, তাদের মনোযোগ, জীবনী শক্তি ও শৃঙ্খলা তত কমে যায়। আবার যুক্তরাষ্ট্রে এক গবেষণায় যুদ্ধফেরত সৈন্যদের সংগঠন ডিপার্টমেন্ট অফ ভেটেরান অ্যাফেয়ার্স স্টাডি দশ বছর ধরে এক হাজার প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তির ওপর গবেষণা চালায়। এদের মধ্যে যারা স্ট্রেস থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করেছিল তাদের মধ্যে বিষণ্ণতা, অফিস ও বাসায় সমস্যা, এমনকি ডিভোর্সের মতো ঘটনাও বেশি ঘটেছে।

অস্বস্তি থাকলে সমস্যা নেই

স্ট্রেস এড়িয়ে যারা থাকতে চান, তারা মূলত সমস্যার আসল জায়গা ঠিক না করে নিজের অস্বস্তি নিয়ে বেশি ভাবেন। অনেক সময় সমস্যা থেকে পালানোর জন্য অ্যালকোহল বা অন্য কোনো খারাপ অভ্যাসের দিকে ঝুঁকে পড়েন। নিজেদের সামাজিক ও পারিবারিক সম্পর্ক থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন অথবা ক্যারিয়ারের প্রতি মনোযোগ কমিয়ে নিজেদের ওপর চাপ কমাতে চান। কিন্ত এমন পলায়নপর মানসিকতার কারণে স্ট্রেস আরো বাড়ে এবং স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণ করারও কোনো উপায় থাকে না।

স্ট্রেস মেনে নেওয়া

তাই স্ট্রেস সামলানোর উপায় হচ্ছে, একে গ্রহণ করে এবং নিজের উদ্দেশ্য পূরণের জন্য একে ব্যবহার করা। এর জন্য অবশ্যই আপনাকে প্রথমে স্ট্রেস বিষয়ে নিজের মনোভাব পরিবর্তন করতে হবে।

মাইন্ডসেট বলতে বোঝানো হয় কোনো বিষয়ে আপনার মূল বিশ্বাস, বা বলা যায় পৃথিবী কীভাবে কাজ করে সে বিষয়ে আপনার মৌলিক ধারণাই হচ্ছে মাইন্ড সেট। প্লাসিবো প্রভাবের কথা আমরা জানি, ওষুধ ভেবে চিনির দলা খেলেও রোগির মনে হয় তার নিরাময় হচ্ছে। তেমনি মাইন্ডসেটও শরীর ও মনের ওপর জোরালো প্রভাব ফেলতে সক্ষম।

মাইন্ড সেট বদলানোর উপায়: কীভাবে নতুন দৃষ্টিতে দেখতে শিখবেন

একটা কাজ করতে পারেন। একটা ছোট লেকচার, ভিডিও বা লেখার মাধ্যমে আপনার নতুন মাইন্ডসেটের বিষয়টি তুলে ধরতে পারেন। যেমন, মনোবিজ্ঞানী গ্রেগ ওয়ালটন আইভি লিগের ফ্রেশম্যান অর্থাৎ ১ম বর্ষের শিক্ষার্থীরা যাতে শিক্ষার্থী কমিউনিটির সাথে ভালোভাবে মিশতে পারে এজন্য একটা পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। ওয়ালটন শিক্ষার্থীদের মধ্যে জুনিয়র ও সিনিয়রদের, আগের কিছু শিক্ষার্থীর মতামত পড়তে দেন। তারা যাতে বুঝতে পারে প্রথম দিকে নিজেরা কেমন ছিল এবং পরে কীভাবে বদলে গিয়েছিল।

এর পরে কী করবেন?

  • আপনার মাইন্ড সেটের জন্য সহায়ক হবে এমন কোনো এক্সারসাইজ বা অনুশীলন করুন
  • আপনার আইডিয়া অন্যদের সাথে শেয়ার করুন
  • নিজের মূল্যবোধের কথা মনে রাখুন

প্রতিদিনের জীবনে কত ধরনের ক্লান্তিকর অভিজ্ঞতা হয় আমাদের। বাজারে কেনাকাটা করতে গিয়ে যখন দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হয়, মনের মধ্যে নানা ধরনের চিন্তা চলে আসে। মনে হয় এইসব ঝামেলার কোনো মানে নেই, এগুলি জীবনে চলার পথে বাঁধা, যার কারণে জীবনের গতি মন্থর হয়ে যাচ্ছে।

আপনাকে যখন নিজের মূল্যবোধ নিয়ে লিখতে বলা হয়, তখন এমন সমস্যাকে বরং অতিক্রম করার মত বলেই মনে হয়। সেই সময় আমরা ভাবি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে, এড়িয়ে যাওয়া যাবে না।

তাই আপনার কাছে জীবনের মানে কী, আপনার মূল্যবোধের মানে কী, এসব বিষয়ে একটা ছোট রচনা লিখে রাখুন। আপনার কাছে কেন এই চ্যালেঞ্জগুলি অর্থবহ মনে হয় এবং প্রতিদিনের জীবনে এগুলি আপনাকে কীভাবে সাহায্য করবে তা লিখে রাখুন রচনাতে।

স্ট্রেস মোকাবেলার জন্য নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা

স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে স্ট্রেসের প্রতিক্রিয়া হতে হবে সঠিক, যাতে তা উপকারে লাগে। যেমন সবার সামনে বক্তৃতা দিতে গিয়ে অনেক নার্ভাস হয়ে গেলে ফাইট অর ফ্লাইট প্রতিক্রিয়া চলে আসতে পারে। কিন্ত এমন পরিস্থিতিতে এটা মোটেই কাম্য নয়। মানুষের মধ্যে তখনই ফাইট অর ফ্লাইট প্রতিক্রিয়া আসে যখন সে ভাবে, পরিস্থিতি সামলানোর মতো দক্ষতা বা সাহস তার নেই।

শেষ কথা

ছোট কোনো ভালো কাজ করলেও আমাদের শরীরে এমন হরমোন তৈরি হয় যা আত্মবিশ্বাস, মনোযোগ ও সহানুভূতি বাড়ায়। তাই স্ট্রেস মোকাবেলার জন্য ‘টেন্ড এন্ড বিফ্রেন্ড’ বা বন্ধুসুলভ প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে চাইলে নিজের ইচ্ছা থেকে ভালো কাজ করতে হবে। এবং একটার পর একটা চ্যালেঞ্জ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।

মানসিক চাপ সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করে কাজে লাগাতে পারলে আপনি দেখবেন এটা আসলেই উপকারী। জীবনকে অর্থপূর্ণ করার জন্য স্ট্রেস বা মানসিক চাপ একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ আমরা সেই বিষয় নিয়েই মানসিক চাপে ভুগি, যেটাকে আমরা মন থেকে ভালোবাসি।