ভদ্রলোকের নাম আমার মনে নাই। এটাও মনে নাই যে, আমি তখন, ওই সময়ে তার নাম জানতাম কিনা। তবে, নাম উদ্ধার করা হয়ত সম্ভব, যদি চাই। তার বয়স সম্ভবত ৩৬-৩৭ ছিল তখন। ফর্সা, লম্বা আর শুকনা গড়নের, আর গোঁফ ছিল। সে কী করত তা জানতাম না, জিজ্ঞাসা করি নাই।

বিশেষ কোনো ঘটনা না, আর তেমন কোনো তাৎপর্যও বহন করে না স্মৃতি হিসাবে। একটু উদ্ভট ধরনের। কখন কী মনে পড়বে সেটা আগে থেকেই আন্দাজ করা যায় না বা নিয়ন্ত্রণ করা যায় না, আমার ক্ষেত্রে কাজ করে না এই বিষয়টা।

একটা জায়গায় ডাইনোসর দেখে মনে পড়ল ঘটনাটা, যেটা আগেও পড়েছে মনে, ডাইনোসর প্রসঙ্গেই।

তবে যে কোনো ঘটনা মনে পড়াটাই কিছুটা বিভ্রান্তি ও অনিশ্চয়তার ব্যাপার, কারণ ঘটনা যা যেভাবে ঘটেছিল, সেভাবেই যে মনে আসবে তার কোনো নিশ্চয়তা নাই। অনেক দূরের কিছু দেখার ক্ষেত্রে যেমন দৃষ্টিবিভ্রম হয় কখনো, অনেক আগের কোনো ঘটনার ক্ষেত্রেও তাই। আমার মনে হয়, দ্য ট্রু মেমোরিজ আর দ্য মেমোরিজ দ্যাট উই হ্যাভ লস্ট।

আমার বয়স তখন আট বা সাড়ে সাত। সেই লোকের সাথে আমার দেখা হইছিল আমাদের গ্রামের বাড়িতে। আমরা প্রায় প্রতি ঈদেই তখন সেখানে যেতাম, টাঙ্গাইলের কালিহাতিতে। সেরকমই কোনো এক ঈদের আশেপাশের সময়ের কথা, আর শীতকাল তখন। সেই বাড়িতে, আমার দাদার বাড়িতে ঢোকার যে রাস্তার মুখটা, তার এক পাশে স্কুল মাঠ, আরেক পাশে ঈদগাহ মাঠ। আর সমান্তরালে এই দুই মাঠের, একটা রাস্তা, যেই রাস্তা এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রাম পার হয়ে আরো দূরে সেইসব গ্রামের দিকে চলে গেছে যেই গ্রামগুলির মাটি লাল, সেখানে বড় বড় টিলা, আর জায়গায় জায়গায় বন। রাস্তাটার অন্য পাশেই ছোট একটা নদী—ঝিনাই, সেখানে পানি থাকে সবসময়, আর বর্ষাকালেই বেশি থাকে। আর এখানেই, এই নদীর পাড়েই, রাস্তার উপরে ওই লোক, যার কথা বললাম, আমাকে একটা প্রশ্ন করছিল। খুবই সিরিয়াস ভঙ্গিতে খুবই ইনসিগনিফিক্যান্ট একটা প্রশ্ন। বা বলা যায় একটা ‘ফানি গেইম’ খেলার চেষ্টা করছিল।

তখন ওই সাড়ে সাত-আট বছর বয়সে, ওই জেনারেশনের আমরা যারা শহরে বাস করতাম, তারা কিছু কমন জিনিস নিয়ে থাকতাম। সবাই তাই থাকে। ক্রিকেট, ফুটবল, কমিকস, ঘড়ি, জুতা, খেলনা। আর যারা আরেকটু বেশি গ্ল্যামারাস তাদের ম্যাকগাইভারের চাকু, ম্যাগনিফাইং গ্লাস। আমার ম্যাকগাইভারের চাকু ছিল, ম্যাগনিফাইং গ্লাস ছিল না। যারা ইন্টেলেকচুয়াল সম্ভাবনার মধ্যে ছিল তারা গল্পের বই। যেমন আমার ছিল। তবে এইসব জিনিস কাজ করত শুধু বাচ্চাদের সার্কেলেই, বড়দের কাছে না। তবে বড় ছোট সবার কাছেই যে জিনিসটা কাজ করত, সেটা হল ইনফরমেশন, নলেজ, বুদ্ধিবৃত্তিক স্মার্টনেস। আমার আকর্ষণ ছিল সেই দিকে।

এরকমই কোনো এক ঈদের আগে বা পরে, শীতের দিনে কোনো এক সকালে আমি বাড়ি থেকে বের হয়ে, দুই মাঠের মাঝখান দিয়ে সেই রাস্তায় গিয়ে দাঁড়াইছি, আর রাস্তার অন্য পাশে নিচেই নদী, তখনো পানি আছে। রাস্তায় রোদ, আর একটু দূরেই সেখানে দাঁড়ায় ছিল সেই লোক, লুঙ্গি আর ফুলহাতা শার্ট পরা, এবং আমি তাকে খেয়াল করি নাই। তবে সে আমাকে চিনত, হয়ত, আমাকে দেখছে, বা আমার সম্পর্কে আমার আত্মীয় বা পরিচিতদের কাছে শুনে থাকবে। সে ডাকল আমারে। কাছে গেলে জিজ্ঞাসা করল, তুমি ডাইনোসর চিনো? আমার সামান্য আশ্চর্য লাগল যে, আমি ঈদে বেড়াইতে গেছি, আর সেখানেই গ্রামের একটা লোক, আমার সাথে আলাপ শুরু করল ডাইনোসর নিয়ে!

আমি আস্তে করে মাথা নাড়লাম, হ্যাঁ।

সে এইবার হাসল, জিজ্ঞাসা করল, সেই আমলে, সেই প্রাচীন কালে ডাইনোসরেরা একটা সভ্যতা গইড়া তুলছিল। বলো তো, সেইটা কী সভ্যতা?

আমি এই প্রশ্নের উত্তর জানতাম না। এই ইনফরমেশন আমার জানা ছিল না। তখন, আমার ভিতরে একটা জিনিসই ঘুরপাক খাচ্ছিল, যে, আমি জানি না—এই সিম্পল ইনফরমেশন আমি জানি না, এবং এখানে এসে, গ্রামের একটা লোক যারে আমি হয়ত মনে মনে তাচ্ছিল্যই করতেছি, সে কত বেশি জানে! এবং তাকে দেখে সেটা মনে হয় না আর আমার পরিচিতরা তার মত এত কনফিডেন্টলি এত কিছু জানে না হয়ত।

কিন্তু ওই ভদ্রলোকের মধ্যে একটা ব্যাপার ছিল, তার ভাব-ভঙ্গিতে, বিশেষ করে তার হাসিতে। অনেকটা আরব্য রজনীর শেহেরজাদের বলা গল্পের ধূর্ত নাপিতদের মত। এই যে আমাকে সে একটা প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করল, এর উত্তর আমি কখনো দিতে পারব কি পারব না, এই প্রশ্নের বা এই খেলার নিয়তি কী তা সে জানেই।

আমি বললাম, জানি না।

এইবার সে স্পষ্টতই হাসল।

আমি জিজ্ঞাসা করলাম, কী সভ্যতা?

সে কিছুক্ষণ চুপ, তারপর বলল, এইটা তুমি খুইজা বাইর করো। তিন দিন পরে উত্তর না পাইলে তোমারে আমি সেইটা বলব।

এই প্রশ্ন মাথায় নিয়ে আমি ফিরে আসলাম, আর সারাদিন পরে আমার আব্বা আর আম্মারে বললাম, ঘটনায় তারা হাসলেন, আর প্রশ্নের উত্তর তো দিলেনই না—কোনো রকম আগ্রহও দেখাইলেন না। আমি কয়েক বার জিজ্ঞাসা করায় একটু বিরক্ত হইলেন আর বললেন, ডাইনোসরের আবার কী সভ্যতা!

পরে যাদেরকে এই প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা যায় বলে আমার মনে হইল, আমি তাদেরকেও জিজ্ঞাসা করলাম, এবং কেউই তা জানে না।

পরের দিন আবার আমার দেখা হইল ওই লোকের সাথে। সে হাসল, আমারে দেখামাত্রই, আর আমি বললাম আমি পারি নাই—এর উত্তর কী? সে বলল, আরো দুইদিন পরে।

এবং আমি উত্তর পাওয়ার আশা ছেড়ে দিলাম। যখন পাওয়া যাবে, যাবে।

আমরা চলে আসার আগের দিন, হিসাবে আমার যেদিন উত্তর পাওয়ার কথা, সেদিন সকালে আমি মাঠ পার হয়ে রাস্তায় গেলাম, আর তারে সেখানে পাওয়া গেল না। তারে পাওয়া গেল দুপুরের পরে। সে আমারে দেখে হাসল—সেই হাসির মধ্যে এমন কিছু একটা ছিল—যার কারণে সেই প্রশ্ন, প্রশ্নের উত্তর, প্রশ্ন করার ভিতরের সিরিয়াস ভঙ্গি—সবকিছু হাওয়ায় একেবারে শূন্যে মিলায়া গেল। আমি সরাসরি জিজ্ঞাসা করলাম, ডাইনোসরেরা কী সভ্যতা গড়ে তুলছিল?

আর সেও কোনোরকম ভণিতা ছাড়াই, সরাসরিই উত্তর দিল, কোনো সভ্যতাই গইড়া তোলে নাই। ডাইনোসরেরা আর কী সভ্যতা গইড়া তুলব!

ইন্টারেস্টিংলি, আমি শুরু থেকেই বিশ্বাস করে ফেলেছি যে ডাইনোসরেরা একটা সভ্যতা তৈরি করছিল, কিন্তু আমি জানি না সেই সভ্যতাটা কী!

পরে আমি হাসছি, অনেক পরেও যখনই মনে পড়ছে। ওই লোকের এই আপাত হিপোক্রিটিকাল ভঙ্গির জন্য, ঘটনার মধ্যে যে একটা উদ্ভট আমেজ আছে—সেটার জন্য। সেই লোক অবশ্যই হিপোক্রিট ছিল না, তবে, গ্রামের কিছু কিছু লোক নিজেদের যেরকম ডিটেচমেন্ট চায় গ্রামের থেকে—তারা মনে করে ও দেখাতে চায় যে—তারা গ্রামে থাকলেও তারা আসলে গ্রামের না, এমন ব্যাপার ছিল তার মধ্যে। এটা একরকম হীনম্মন্যতা, আর ওই লোকের সাইকোলজি আমলে নিলে, তার কাছে সম্ভবত এটা ছিল ওই হীনম্মন্যতা ডিল করার “স্মার্ট” পদ্ধতি।

আমার এই ঘটনাটা মনে পড়ল, একটা উপন্যাস পড়তেছিলাম—কোথা থেকে প্রাণের বিকাশ ঘটল আর কীভাবে মানব সভ্যতা আজকের জায়গায় আসল—সেই জিনিস সিমুলেশন করে দেখায় উপন্যাসের একটা জায়গায়। আর, সেখানে, ওই সিমুলেশনের মধ্যে মানুষ পৃথিবীতে আসার অনেক অনেক আগে ডাইনোসরদের বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার অংশটাও ছিল। আর তখন আমার আচমকাই হয়ত, মনে হল, ডাইনোসর খুব কমন একটা আলাপ, খুবই ক্লিশে একটা আলাপ। প্রাণের উৎপত্তি, প্রাণের বিকাশ, মানব সভ্যতা, পরিবেশ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বিলুপ্তি—যেকোনো প্রসঙ্গেই ডাইনোসর প্রসঙ্গ আসবেই—অবধারিত ভাবেই। আর সেই ডাইনোসরদের থেকেই আমার মনে আসল তার কথা, ওই লোকের কথা।

এখন চিন্তা করলে, ওই লোকের কথা বা যে ভঙ্গিতে সে ওই গেইমটা খেলছিল তখন, পুরা ব্যাপারটা থেকে তারে আমার  কিছুটা সেমি-দার্শনিক মনে হয়।

এই ঘটনার অন্য একটা দিক আছে, আমি এখন আবিষ্কার করছি সেটা, ওই লোকের সাথে বা ওই ঘটনার সাথে তার সরাসরি সম্পর্ক নাই। সেই দিকটা আবার ইনফরমেশন বিষয়ে আমার যে অবস্থান তার সাথে সম্পর্কিত।

ইনফরমেশন কারা উৎপাদন করে? কাদের কাছে থেকে আমরা সাধারণত ইনফরমেশন পাই? ইনফরমেশন উৎপাদন ও ছড়ানোর কাজটা করে—যারা আমাদের অথরিটি, যারা সমাজের অথরিটি—যেমন রাষ্ট্র, স্কুল-কলেজ, ইউনিভার্সিটি, করপোরেশন এবং মিডিয়া।

আর এখন আরো বিশালভাবে সেইটা ঘটে, ইন্টারনেট ও সোশ্যাল মিডিয়ায়।

ইনফরমেশনের এমন প্রাচুর্য আর এত সহজলভ্যতা এর আগে ইতিহাসে কখনোই ছিল না। আর আগে কখনো কল্পনা করাও সম্ভব হয় নাই যে ইনফরমেশনের প্রাচুর্য আর সহজলভ্যতা এখানে পৌঁছাবে।

কিন্তু, ইনফরমেশন জিনিসটা কী? ইনফরমেশন জিনিসটাকে কীভাবে দেখা উচিৎ?

ইনফরমেশন হইল কিছুই না, নাথিং। এটা একটা ফ্যান্টাসি। অ্যাবস্ট্রাক্ট একটা জিনিস। অ্যাবস্ট্রাক্ট একটা টুল। ইনফরমেশন ইজ ননএক্সিসট্যান্ট আনটিল অ্যান্ড আনলেস এ পারসন এক্সপেরিয়েন্সেস ইট ইন এ ইউজফুল ওয়ে। যতক্ষণ না কেউ কোনো ইনফরমেশন বা তথ্যকে নিজের কাজে লাগানোর মাধ্যমে প্রত্যক্ষ করছে ততক্ষণ ওই ইনফরমেশনের কোনো অস্তিত্ব নাই।

সায়েন্সের একটা গুরুত্বপূর্ণ দিক হল, শুধু ফলসিফায়েবল থিওরিগুলিকে সম্মান করতে হবে। মানে, যেসব থিওরি মিথ্যা না সত্য তা প্রমাণ করা যাবে, পরীক্ষা করা যাবে, শুধু সেই থিওরিগুলিকেই থিওরি হিসাবে গ্রহণ করা যাবে। যার টেস্টেব্যালিটি নাই, যার সত্য বা মিথ্যা প্রমাণ করা যাবে না—তা থিওরি না।

ইনফরমেশনও তাই। যতক্ষণ না কেউ সেই ইনফরমেশন প্রত্যক্ষ করছে, বা তার অভিজ্ঞতার ভিতরে সেই ইনফরমেশন সরাসরি কাজ না করছে, ততক্ষণ সেই ইনফরমেশন যা, ফ্যান্টাসিও তা।

যেমন, মঙ্গল গ্রহে প্রথম ড্রোন উড়াল নাসা—এই ইনফরমেশন আমার সামনে আসল, অনেক জায়গা থেকে, কয়েক দিন ঘুরল—এই ঘটনাটা হয়ত নাসার জন্য সত্য, যেহেতু নাসার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার মধ্যেই ঘটেছে, কিন্তু আমার যেহেতু এর ফলসিফায়েবিলিটি প্রমাণ করার ক্ষমতা নাই—এবং কোনো রকম ইচ্ছাও নাই, ফলে আমার কাছে ফ্যান্টাসির চাইতে এর কী বেশি মূল্য!

ইনফরমেশন কখনোই সত্য বা বাস্তব কোনো জিনিস না। ইনফরমেশন সবসময়ই একটা অ্যাবস্ট্রাক্ট জিনিস। মানুষ কোনো ইনফরমেশনকে সত্য বলে ধরে নেয়, কোনো ইনফরমেশনের ব্যাপারে প্রশ্নহীন থাকে, যখন সেই ইনফরমেশন বড় কোনো অথরিটি থেকে আসে—যেমন রাষ্ট্র, যেমন নাসা বা ইউনেস্কোর মত প্রতিষ্ঠান, যেমন কোনো বিশ্ববিদ্যালয়, যেমন গুগলের মত কোনো কর্পোরেশন। সেই ইনফরমেশনের সাথে মানুষের যদি কোনো প্র্যাকটিক্যাল সম্পর্ক নাও থাকে, সেই ইনফরমেশনকে মানুষ তার বাস্তবতার অংশ মনে করে, একটা কাল্পনিক সামগ্রিক বাস্তবতার মধ্যে মানুষ থাকে। কিন্তু বাস্তবতা সবসময়ই খণ্ডিত ও রিলেটিভ একটা জিনিস। আর এর ফলে, যারা ইনফরমেশনের উৎপাদক বা মালিক, তাদের দিকে দুইটা কাজ হয়—তাদের অথরিটি ফাংশনাল থাকে, এবং তারা নিজেদের মত ‘সত্য’ ও ‘বাস্তবতা’ তৈরি করে। কিন্তু ইনফরমেশন একটা অ্যাবস্ট্র্যাক্ট জিনিস, ইনফরমেশন কখনো সত্য না।

ইন্টারনেট আর টুইটারে আর ফেসবুকেও যেটা হয়, বেশির ভাগেরই নিজের বক্তব্য বা অভিজ্ঞতা নাই, সেখানকার পপুলেশনের বেশির ভাগই ইনফরমেশন শেয়ার করে, ইনফরমেশন ছড়ায় নাইলে ইনফরমেশন গ্রহণ করে। কারণ, আগে বই এই কাজটা করত, এবং এখন এই যুগে আরো মারাত্মক ভাবে ইন্টারনেট ও টেকনোলজিক্যাল কর্পোরেশন মানুষের সাইকোলজিকে এমন ভয়ানক ভাবে ম্যানিপুলেট করেছে যে—ব্যক্তিমানুষ মনে করে সে যদি সবসময় ইনফরমেশনের সার্কুলেশনের মধ্যে না থাকে, ইনফরমেশন গ্রহণ না করে তাহলে সে আসলে এক্সিস্ট করে না।

রিয়ালিটি মোর অর লেস সবসময়ই অ্যাবস্ট্র্যাক্ট। ইনফরমেশনের ওভার-প্রডাকশন আর ওভার-সার্কুলেশনের মধ্যে থাকলে, ইনফরমেশনকে অভিজ্ঞতার চাইতে বেশি গুরুত্ব দিলে বা ইনফরমেশনকে বাস্তবতা মনে করলে, রিয়ালিটি আরো বেশি অ্যাবস্ট্র্যাক্ট হয়ে ওঠে। যেমন, ডাইনোসরদের সভ্যতার কারণে হয়ে উঠেছিল, আমার, সাত-আট বছর বয়সে।

ইনফরমেশন একটা জড়, লাইফলেস বিষয়।  ইট’স ইভেন লেস দ্যান লাইফলেস।

ইনফরমেশন কখনোই সত্য না। ইনফরমেশন একটা অ্যাবস্ট্র্যাক্ট। একটা ফ্যান্টাসি। তবে নিরীহ না, যেহেতু কোনো না কোনো অথরিটির হাতেই তার মালিকানা থাকে।