রুবাইয়াত হোসেনের দ্বিতীয় ছবি আন্ডার কনস্ট্রাকশন তার কথায়, প্রথম ছবি হিসেবে মেহেরজান-এর গল্প অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং ছিল, অনেক কমপ্লিকেটেড ছিল। সে তুলনায় আন্ডার কনস্ট্রাকশন-এর গল্প অনেক বেশি ‘মেডিটেটিভ’। সাক্ষাৎকারটি নেওয়া হয়েছে ২০১৩ সালে, সিনেমা মুক্তির প্রায় ২ বৎসর আগে, শুটিং চলার সময়ে।

‘আন্ডার কনস্ট্রাকশন’ নিয়ে রুবাইয়াত হোসেন

সাক্ষাৎকার: আশরাফুল আলম শাওন

আশরাফুল আলম শাওন: এই সিনেমার নাম?

রুবাইয়াত হোসেন: নাম হচ্ছে ‘আন্ডার কনস্ট্রাকশন’।

শাওন: এটা কি ফাইন্যাল নেইম? ফিক্সড শেষ পর্যন্ত?

রুবাইয়াত: হ্যাঁ। আশা করি শেষ পর্যন্ত থাকবে। আর স্টোরি যদি খুব ব্রিফলি বলি তাহলে এটা ঢাকা শহরের কনটেক্সটে একটা মেয়ের লাইফ। এর বেশি এখন কিছু বলতে চাচ্ছি না।

শাওন: বাংলাদেশের কনটেক্সটে?

রুবাইয়াত: মানে ঢাকার কনটেক্সটে, স্পেসিফিক্যালি।

শাওন: বাংলাদেশের কনটেক্সট অনুযায়ী সিনেমার কাহিনীর মধ্যে কন্ট্রোভার্শিয়াল কিছু আছে? বা এরকম কিছু?

রুবাইয়াত হোসেন
আন্ডার কনস্ট্রাকশন (২০১৫) ছবির পোস্টার

রুবাইয়াত: বাংলাদেশের, আমার তো মনে হয় বাংলাদেশের সব ছবির মধ্যেই কন্ট্রোভার্সি খুঁজে পাওয়া সম্ভব। মানে যেভাবে দেখে। আমার মনে হয় বাংলাদেশের, মানে, মেহেরজান-এর যে রিঅ্যাকশন তাতে আমার মনে হইছে যে বাংলাদেশে সাধারণ অডিয়েন্স না কিন্তু যারা কালচারাল এলিট, তারা খুব কনজারভেটিভ। মনে হয় তারা খুব ওপেন-মাইন্ডেড কিন্তু তারা খুব কনজারভেটিভ। কারণ, তাদের বাঁধাধরা কিছু চিন্তা এবং ছকের মধ্যে তারা কাজ করে। এর বাইরে যদি কোনো কিছু হয় সেটাকে তারা অ্যাটাক করে বা খারাপ মনে করে বা বন্ধ করে দিতে চায়। তো সেদিক থেকে আমার মনে হয়, তারা ধরেন এই যে থার্ড পারসন সিঙ্গুলার-এ একটা সিন ছিল কনডম কিনছে, সেটা নিয়েও কন্ট্রোভার্সি হয়েছে। সো আমি ওভাবে বলতে পারছি না। ফিল্মটা বের হওয়ার পর…।

শাওন: বোঝা যাবে?

রুবাইয়াত: বোঝা যাবে।

শাওন: সিনেমার কাস্টিংয়ের ব্যাপারে কিছু বলেন।

রুবাইয়াত: কাস্টিং এর ব্যাপারে, খুব কম সংখ্যক চরিত্র। সাতটা চরিত্র পুরা ফিল্মে। তো, আমি চেষ্টা করছি খুব স্পেসিফিকভাবে, অডিশন করে অ্যাক্টরদের সাথে, মানে কথা বলে তারপর কাস্টিংটা করতে। তো সে জায়গা থেকে কাস্টিং নিয়ে আমি খুব হ্যাপি। সো ফার, প্রত্যেকের কাজেই আমি খুব হ্যাপি। শাহাদাত হোসেন, মিতা চৌধুরী, তৌফিকুল ইসলাম ইমন, প্রাচ্যনাটের সোহেল, তারপরে আপনার টোকাই নাট্যদলের রিকিতা নন্দিনী শিমু। আর ইন্ডিয়া থেকে শাহানা গোস্বামী আর রাহুল বোস। এদের প্রত্যেকের,  মিতা আপার কথা কি বললাম… মিতা চৌধুরী?

শাওন: হ্যাঁ।

রুবাইয়াত: হ্যাঁ হ্যাঁ, মানে ওনার সাথে কাজ করে আমি খুবই হ্যাপি। শাহাদাত হোসেনের সাথে কাজ করে আমি খুব… প্রত্যেকের সাথে কাজ করে আমি খুব এক্সাইটেড।

শাওন: ইন্ডিয়ানদের সাথে কাজ করেও?

রুবাইয়াত: ইন্ডিয়ানদের সাথে কাজ করেও এক্সাইটেড। শাহানা আসলে, আমি মনে করি যে শাহানা, মানে এত ডেডিকেটেড, এত প্যাশনেট, এত সিরিয়াস—এটা খুব কঠিন পাওয়ার আসলে দ্যাট ইজ ইন হার।

শাওন: ইন্ডিয়া থেকে দুইজন, একজন অ্যাকটর একজন অ্যাকট্রেসরে কাস্ট করছেন, এটার পিছনে আসলে কারণ কী ছিল? যে, অভিনয় দিয়ে মুগ্ধ?

রুবাইয়াত: না না, কারণ হচ্ছে যে শাহানা যে রোলটা করে এই ফিল্মে, আমি একদম রিয়াল একটা মেয়ে চাচ্ছিলাম যে নায়িকাসুলভ না। ক্যামেরার সামনে দাঁত ব্রাশ করবে, ঘুমাবে, ঘুম থেকে উঠবে, ঝগড়া করবে, কানবে। মানে সবসময় যে তাকে গ্ল্যামারাস বা বিউটিফুল হতে হবে সেরকম না। অ্যাকট্রেসদের এটা খুব প্রবণতা, তারা ক্যামেরার সামনে সুন্দর হয়ে আসতে চায়। বাংলাদেশেও আমি দুজন অ্যাকট্রেসের সাথে কথা বলছি, অডিশন করছি। তো আমার মনে হয় নাই যে তারা এই রোলটা করতে পারবে। তারপরে ইন্ডিয়াতেও আমি এক-দুইজনের সাথে কথা বলছি, তারপরে শাহানাকেই আমার ফাইনালি মনে হল যে সে আমাকে এই সময়টা দিবে, এই ডেডিকেশনটা দিবে।

শাওন: এটার শুটিং শুরু হইছে কবে?

রুবাইয়াত: এক তারিখে অগাস্টের।

শাওন: আর এর মধ্যে আপনি খেয়াল করছেন কিনা জানি না, দেখা গেছে যে অনলাইন মিডিয়া বা অন্যান্য নিউজ মিডিয়াতে সমালোচনা আসছে আপনার নামে অলরেডি।

রুবাইয়াত: আচ্ছা।

শাওন: যে তারা অভিযোগ করছে যে এরকম, আপনি ইন্ডিয়ান আর্টিস্ট নিছেন কিন্তু অনুমতি নেন নাই। তারপরে আর কী… যে গোপনে শুটিং করতেছেন, এরকম এরকম কথাগুলা লিখছে। এটা নিয়ে আপনার বক্তব্যটা কী?

শাহানা গোস্বামী

রুবাইয়াত: এখন আপনার, ওয়ার্ক পারমিট করাটা কিন্তু খুব ইজি একটা বিষয়। খুব কঠিন না কিন্তু। এটা আপনি একটি বিদেশী আর্টিস্টের সাথে কাজ করবেন, তার পাসপোর্টের কপি আনবেন, একটা পারমিশনের জন্য জমা দিবেন, এফডিসি-তথ্য মন্ত্রণালয়, হয়ে যাবে। তো পারমিশন করব না, পারমিশন না করে আবার সেটাকে ঢাকার জন্য গোপনীয়তাটা করব এটা আমার কাছে একটু অড মনে হচ্ছে। আমার, শুধু আমার নায়ক-নায়িকা না, আমার ইকুইপমেন্টও ইন্ডিয়া থেকে আসছে। সেটার জন্যও আমার পারমিশন আছে। আমার সাউন্ডের লোক ইন্ডিয়া থেকে আসছে, আমার ক্যামেরার লোক ইন্ডিয়া থেকে আসছে, আমার ডিওপি অ্যামেরিকা থেকে আসছে। তো আমার ছবিতে প্রচুর লোক কাজ করছে যারা…

শাওন: বাইরের?

রুবাইয়াত: বাইরের। তো অবশ্যই আমরা অনুমতি নিয়েই এটা করছি। আর যদি এ ধরনের নিউজ আসে তো তারা না জেনে লিখছে। তাদের তো কোনো ভিত্তি নাই। অ্যানাদার থিং আই ওয়ান্ট টু সে ইজ, শুটিং ইজ এ প্রাইভেট ম্যাটার। হোয়েন ইউ টেইক দ্য ফিল্ম ইন দ্য থিয়েটার দ্যাটস এ পাবলিক ম্যাটার। সো হোয়েন আই শ্যুট মাই ফিল্ম, আই অ্যাম ক্রিয়েটিং মাই আর্ট। সো হোয়েন আই অ্যাম রাইটিং এ পোয়েম অর পেইন্টিং অর সামথিং, আই ওয়ান্ট টু বি অ্যালোন। হোয়েন আই মেইক এ ফিল্ম আই ওয়ান্ট টু বি অ্যালোন। যখন ছবিটা হয়ে যাবে এটা আমি প্রকাশ্যে দেখাবো। এখন আপনি যদি মনে করেন যে আপনি একটা কবিতা লেখবেন আপনার ঘাড়ের ওপর দশজন সাংবাদিক এসে দাঁড়ায় থাকবে, আপনি হয়ত অতটা ভালোভাবে লিখতে পারবেন না।

তো সেই কারণেই আমি একটু ক্লোজ সেট মেইনটেইন করছি। এমনকি আমাদের শুটিংয়ে যখন আমি শট নিচ্ছি তখন আমার টিমেরও যাদের দরকার নাই, দে ডোন্ট কাম ইনসাইড। তো ওইটা একটা প্রাইভেসি মেইনটেইন করা হচ্ছে। ওটা কোনো গোপনীয়তা না। আমার মনে হয় শুটিং একটু গোপনেই হওয়া উচিত, সিনেমাটা প্রকাশ্যে দেখালে বেটার। আর অনেক ফিল্মই তো নিউজ হয় আমাদের পত্রিকায়, কত ফিল্ম! শুরু হচ্ছে, হবে, বহুত ফিল্ম শেষও হয় না, হল পর্যন্ত আসে না। তো আমি ফিল্মটা তৈরি করার সময় এটা প্রচার করার চেয়ে, ফিল্মটা যখন হয়ে যাবে, যখন আমি থিয়েটারে নিয়ে যাব তখন আমি এটার প্রচার করতে… মনে করি বেশি লজিক্যাল।

‍”আমার মনে হয় শুটিং একটু গোপনেই হওয়া উচিত, সিনেমাটা প্রকাশ্যে দেখালে বেটার।”

শাওন: সিনেমাতে টেকনিশিয়ান কারা কারা বাইরে থেকে আসছে? ডিওপি… (ডিরেক্টর অব ফটোগ্রাফি)?

রুবাইয়াত: আমার ডিওপি বাইরে থেকে আসছে।

শাওন: উনি অ্যামেরিকান?

রুবাইয়াত: উনি জার্মান, কিন্তু অ্যামেরিকায় থাকে। মার্টিনা র‍্যাডওয়ান। আরেকজন ক্যামেরা অ্যাসিসট্যান্ট এসেছে আমেরিকা থেকে, লরা নেসপলা। দুইজনই ক্যামেরায় মহিলা, ক্যামেরা অ্যাসিসট্যান্ট এবং ডিওপি। আপনার ক্যামেরা এসেছে ইন্ডিয়া থেকে।

শাওন: ক্যামেরা কোনটায় শ্যুট করছেন?

রুবাইয়াত: অ্যালেক্সা। অ্যারি অ্যালেক্সা। অ্যারি অ্যালেক্সা বাংলাদেশেও আছে কিন্তু এটাতে যে র’তে শ্যুট করার যে, আপনার হাইয়েস্ট রেজুলেশানের শ্যুট করার যে প্রভিশনটা সেটা এখানে নাই। আর এখানে থেকে ইন্ডিয়াতে ভাড়া অনেক কম। ইন্ডিয়া থেকে আমরা নিয়ে আসছি, ওখান থেকে ক্যামেরার সাথে দুজন আসছে।

শাওন: আর মেহেরজান করার পরে এটা তো আপনার সেকেন্ড ছবি, মেহেরজানের অভিজ্ঞতা কি কোনো কাজে দিচ্ছে? বা মেহেরজানের সাথে কোনো ডিফারেন্স ক্রিয়েট হচ্ছে?

রুবাইয়াত: মানে ফিল্মটা বানানোর ক্ষেত্রে?

শাওন: হ্যাঁ। বা অভিজ্ঞতা কাজে লাগতেছে?

রুবাইয়াত: হ্যাঁ হ্যাঁ। অভিজ্ঞতা তো ভীষণভাবে কাজে লাগছে। কারণ মেহেরজান বানানোর…

শাওন: দুইটার সিচুয়েশনের ডিফারেন্সটা কী রকম?

রুবাইয়াত: কোন ধরনের সিচুয়েশন?

শাওন: মানে শুটিং করতে যাইয়া?

রুবাইয়াত: অনেক বেটার এবার। এবার অনেক বেটার। এবার আমি মনে করছি আমি অনেক বেশি এনজয় করছি, এবার আমার ইউনিট অনেক ছোট, আমার অ্যাক্টর অনেক কম, গল্পটা অনেক বেশি পারসোনাল, ইন্ট্রোস্পেক্টিভ একটা গল্প, অনেক মেডিটেটিভ। সো, মানে, আই অ্যাম এনজয়িং মোর।

আর মেহেরজান যেহেতু আমার ফার্স্ট ফিল্ম ছিল, ফার্স্ট ফিল্ম হিসেবে অনেক বিগ ফিল্ম ছিল। অনেক কাস্ট, অনেক কমপ্লিকেটেড একটা স্টোরি আমি চ্যুজ করি, ওইদিক থেকে দেখতে গেলে, মানে মেহেরজান অনেক চ্যালেঞ্জিং ছিল। আমি অনেক কিছু শিখছি ফিল্ম মেইকিং-এর পুরা প্রসেসটা। আমি প্রথমবার এফডিসির ক্রুদের সাথে কাজ করছি, প্রথমবার আমি এরকম একটা সিচুয়েশনে যাচ্ছি, এফডিসির একটা সেটের মধ্যে যাচ্ছি। কিন্তু এখন তো আমি মোর ইউজড টু।

শাওন: আর মেহেরজান যে ফার্স্টে… মানে বাংলাদেশে যেটা হলো যে মেহেরজান একটা অন্যরকম ছবি ছিল।

রুবাইয়াত: হুঁ।

শাওন: কিন্তু মেহেরজান দেখা গেল যে শেষপর্যন্ত চলল না, বা ইন্টেলেকচুয়ালদের চাপেই নামায় নেয়া হলো, তো এটা নিয়ে আপনার মূল্যায়নটা আসলে কী? আপনার ফার্স্ট ফিল্ম ছিল এটা।

রুবাইয়াত: এখন আমি মনে করি যে, আমি আশা করি যে এটা আবার চলবে হলে। এখন না হোক, দুই বছর পরে হোক, তিন বছর পরে হোক, চলবে। আর ফিল্মটা কিন্তু এখনো বিভিন জায়গায় দেখানো হয়। ফেস্টিভ্যালে দেখানো হয়, ইউনিভার্সিটিতে দেখানো হয়, প্রচুর একাডেমিক ডিসকাশন এটা নিয়ে হইছে। এটা নিয়ে আপনার হার্ভাড ইউনিভার্সিটিতে… স্ক্রিনিং অব দি ফিল্ম অ্যান্ড প্যানেল ডিসকাশন হইছে। ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসে হইছে, ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনে হইছে। সো দ্যাট, একাডেমিক জায়গা থেকে ফিল্মটা অনেক বেশি অ্যাপ্রিশিয়েটেড। এবং আই অ্যাম হ্যাপি অ্যাবাউট দ্যাট। কারণ ফিল্মটা, ফিল্মটার যে প্রেমিস, এ ক্রিটিক অব ন্যাশনালিজম, ইটস ভেরি মাচ অ্যাবাউট পলিটিকস, সো ওইটার মধ্যে অনেক… আর আমি ফিল্মটা বানাচ্ছি তখন আমি মাত্র মাস্টার্সটা শেষ করছি, সো আই ওয়াজ রিয়েলি ইন এ একাডেমিক মাইন্ড-সেট দ্যান এ…

শাওন: দ্যান এ ফিল্মমেকার?

রুবাইয়াত: মানে ফিল্মমেকারও ছিল, বাট মোর অব এন একাডেমিক মাইন্ড-সেট যে আই হ্যাড দিস থিওরি অ্যাবাউট ন্যাশনালিজম দ্যাট আই ওয়ান্টেড টু, মানে এক্সপ্লোর ইন দ্যা ফিল্ম। অ্যান্ড আই থিঙ্ক দ্যাট হ্যাজ বিন রিসিভড ওয়েল ইন দ্য একাডেমিয়া অ্যান্ড দেয়ার আর পিপল হু আর রাইটিং পেপারস অ্যাবাউট মেহেরজান, দেয়ার আর পিপল হু হ্যাভ… ইউ নো আই স্টিল গেট ই-মেইল যে এটা নিয়ে, কেউ দেখাচ্ছে, সো ওইদিক থেকে আমি রিয়েলি হ্যাপি আর আমার মনে হয় যে বাংলাদেশে ইন্টেলেকচুয়ালরা এটা নিতে পারে নাই, এটা তাদের লিমিটেশন। তাদের ব্যাগেজ আছে, তারা মনে করে যে এই জিনিসগুলা দেখানো উচিত না। সো এটা তাদের জাজমেন্ট কিন্তু…

শাওন: ইন্টেলেকচুয়ালরা একটা সাইড তো সাপোর্টও করছে।

রুবাইয়াত: না, এখন কে সাপোর্ট করছে, কে সাপোর্ট করছে না দ্যাটস নট দ্য কোয়েশ্চেন। দ্য কোয়েশ্চেন ইজ বেশিরভাগ মানুষ… একটা সিচুয়েশন ক্রিয়েট হইছে যেখানে ফিল্মটা নামায় দেওয়া হইছে এবং আমার উপর প্রচুর প্রেশার ক্রিয়েট করা হইছে। যে ট্যাবু ক্রিয়েট করা, একটা ট্যাবু ক্রিয়েট করে না যে এই তুমি এটা, তুমি ওটা, তুমি রাজাকার, তুমি রাজাকার। তো এমন একটা ট্যাবু আমাকে ক্রিয়েট করার চেষ্টা করা হইছে যেটা অলমোস্ট লাইক যে ভেরি হার্ডফুল, আমি আসলে অনেক স্ট্রং, আমি এগুলা কেয়ার করি না। আমাকে এগুলা স্পর্শ করতে পারে না। কিন্তু আমার জায়গায় অন্য কেউ হলে হয়ত অনেক বেশি আপসেট হয়ে যেত। কিন্তু আমি, আই ডোন্ট কেয়ার। কারণ আফটার এ পয়েন্ট আমার মনে হইছে এটা তো, এরা যারা বলতেছে তারা তো আমাকে চিনে না। তো তারা এইগুলা বলতেছে, কথাটার তো কোনো ভ্যালু থাকতে পারে না।

আর আমি আসলে, এমনি পারসোনালি অন্য মানুষ কী ভাবে এটা আমি বেশি কেয়ার করি না। আমার লাইফেও করি না, আমার কাজেও করি না। সো আমাকে, ধরেন আমি আবার এমন না যে মেহেরজানের পর সেকেন্ড ফিল্ম খুব সাবধানে বানাবো, আমার যেটা বানাতে ইচ্ছা করবে আমি সেটাই বানাবো। এবং আমার একটা ফ্রেন্ড মেহেরজানের পর আমাকে বলছিল যে, ইউ নো দ্য গ্রেটেস্ট লস উড বি যে আফটার দিজ রিঅ্যাকশন ইফ ইউ স্টার্ট সেন্সরিং ইয়োরসেলফ। এবং আমার মনে হইছে কথাটা খুব সত্যি, যে আসলে মেহেরজানের পর যদি ভয় ঢুকে যেত আমার মধ্যে, আমি যদি সারাক্ষণ নিজেকে সেন্সর করতে থাকতাম যে, না আমি এইটা বলব না, তাহলে আমার একটা অনেক বড় ক্ষতি হত। কিন্তু সেটা হয় নাই।

“মেহেরজানের পর যদি ভয় ঢুকে যেত আমার মধ্যে, আমি যদি সারাক্ষণ নিজেকে সেন্সর করতে থাকতাম যে, না আমি এইটা বলব না, তাহলে আমার একটা অনেক বড় ক্ষতি হত। কিন্তু সেটা হয় নাই।”

শাওন: আপনি কি মনে করতেন না যে যদি মেহেরজানটা চলত বা, ইন্টেলেকচুয়ালরা যে অ্যাটিচিউড করছে বা কালচারাল এলিটরা, নরমাল পিপল এই অ্যাটিচিউডটা করত না।

রুবাইয়াত হোসেন

রুবাইয়াত: না, আমার মনে হয় না যে নরমাল পিপল অ্যাটিচিউডটা করত। কারণ আমার মনে হয় যে আমাদের যে নরমাল অডিয়েন্স, আমি এখন তাদের জন্য ফিল্ম বানাই। আর নরমাল অডিয়েন্সকে আমার মনে হয় অনেক বেশি তারা রিসেপটিভ, তারা অনেক বেশি ওপেন মাইন্ডেড, এবং তারা অনেক বেশি আসলে তাদেরকে আমরা যতটুকু স্মার্ট ভাবি তারা তার থেকে অনেক বেশি স্মার্ট। একটা ফিল্ম দেখে কিন্তু তারা বুঝতে পারে। আমি বলাকায় মেহেরজান দেখতে গিয়েছি ওখানে রিকশাওয়ালারাও কিন্তু দেখতেছিল, তালি দিচ্ছিল। তো তারা কিন্তু কানেক্ট করছে। ওখানে নাচ গান কিছুই কিন্তু ফিল্মের মধ্যে নেই… ইংলিশ ডায়লগ, তাও তারা দেখছিল।

সো আমার মনে হয় যে সাধারণ অডিয়েন্স… দে টেইক এভরিথিং ভেরি নরম্যালি, দে আর ওপেন-মাইন্ডেড। তারা যেকোনো একটা আর্টকে বা ফিল্মকে নিতে পারে। ইন্টেলেকচুয়ালরা হচ্ছে সোসাইটিতে, মানে শুধু ইন্টেলেকচুয়ালরা না, কালচারাল এলিট যারা একটা লেবেল করে দেয় যে, না, এটা ভালো এটা খারাপ। এবং তখন, সাধারণ মানুষ তো ওপিনিয়ন ক্রিয়েট করে না, তারা ওপিনিয়ন ফলো করে। তো ওপিনিয়ন ক্রিয়েট করা হইছে তাদের জন্য যে ইটস এ ব্যাড মুভি, এটা একটা রাজাকার মুভি, ইফ ইউ গো অ্যান্ড সি, দেন ইউ ডোন্ট লাভ ইয়োর কান্ট্রি। দেন দে ফলো দ্যাট ওপিনিয়ন।

আগস্ট ২০১৩