“কাজ করার চাইতে বরং কাদের সাথে কাজ করবেন এবং কীভাবে করবেন তা বেছে নেওয়ার সুযোগ থাকাটাই আসল।”

—মিলচো মানচেভস্কি

পরিচালক মিলচো মানচেভস্কি’র প্রথম সিনেমা ১৯৯৪ সালের ‘বিফোর দ্য রেইন’। ছবিটা ওই বছর অস্কারে “সেরা বিদেশি ভাষার ফিল্ম” ক্যাটাগরিতে মনোনীত হয়েছিল। বিষয়বস্তুর দিক থেকে এ সিনেমাকে আলেহান্দ্রো গনজালেজ ইনারিতুর ‘ব্যাবেল’ (২০০৩) এর পূর্বসূরি ভাবা যায়। কিন্তু প্রথম সিনেমা দিয়েই আন্তর্জাতিক খ্যাতি পাওয়ার পরও চলচ্চিত্র উৎসবগুলির মূলধারায় মানচেভস্কিকে আর তেমন সাড়া ফেলতে দেখা যায় নাই। অবশ্য ২০১৭ সাল পর্যন্ত তার ফিচার ফিল্ম আছে মাত্র পাঁচটা। আমেরিকার ব্রুকলিন কলেজে প্রফেসর হিসাবে আছেন তিনি; এছাড়া ফটোগ্রাফি, পেইন্টিং এবং লেখালেখিও করেন। তার ওয়েবসাইট : http://manchevski.com/

১৯৯৫ সালের মার্চ মাসে আমেরিকান ফিল্ম ক্রিটিক রজার ইবার্ট এ সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন।

 


দ্য ‘রেইন’ মেকার

রজার ইবার্ট
অনুবাদ : আয়মান আসিব স্বাধীন


ম্যাসেডোনিয়ার একটা ছেলে মুভি ডিরেক্টর হতে চায়। কিন্তু বেলগ্রেডের অফিশিয়াল ফিল্ম স্কুলে নতুন কোনো ছাত্র ভর্তি করা হচ্ছে না। ছেলেটা যে শহরে থাকে সেখানে একদিন সাউদার্ন ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক ভাষণ দিতে আসলেন। অধ্যাপকের কাছে গিয়ে সে তার ফিল্ম স্কুলে পড়ার আগ্রহের কথা জানালো। অধ্যাপক বললেন, “ঠিক আছে। তোমার কিছু কাজ পাঠাও আমাকে।” ছেলেটা পরে নিজের কিছু লেখা আর শর্ট ফিল্ম নিয়ে কার্বনডেলে মেইল করে পাঠালে তাকে একটা স্কলারশিপ দিয়ে দেয় তারা।

এভাবে করেই মিলচো মানচেভস্কি ইলিনয়ে এসে পৌঁছালেন। তিনি মনে করেছিলেন, ইংরেজি তিনি ভালোই জানেন— “স্কুলে থাকতে শিখেছিলাম। কিন্তু ওরা আবার সব শব্দ শেখায় না। যেমন, এই শব্দটার মানে আমি জানতাম না…” এমন একটা শব্দের কথা তিনি বললেন, ইংরেজি জানলে যে বিশেষ্যপদ জানাটা খুব জরুরি। “পরে স্টিভ জেমস আমাকে ওই শব্দটা শিখায় দিছিলেন,” গর্ব করে বললেন মানচেভস্কি, “তিনি আমার কয়েক বছরের সিনিয়র।”

স্টিভ জেমস পরে ‘হুপ ড্রিমস’ নামের ডকুমেন্টারি বানিয়েছেন, আর মিলচো মানচেভস্কি বানান ‘বিফোর দ্য রেইন’। এই ১৯৯৫ সালে মানচেভস্কির সিনেমাটা অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডের জন্য সেরা বিদেশি সিনেমা বিভাগে মনোনীত হয়েছে। আর ‘হুপ ড্রিমস’ এবং অস্কার নিয়ে বেশি কিছু না বলাই ভালো।

বিফোর দ্য রেইন সিনেমার পোস্টার

‘বিফোর দ্য রেইন’ বেশ একটা সিনেমা। ১৯৯৪ ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে গোল্ডেন লায়ন জয়ী এ ছবিকে ট্যারান্টিনোর ‘পাল্প ফিকশন’, ক্রিস্তফ কিসলোস্কির ‘রেড’ ও অ্যাটম এগোইয়ানের ‘একজোটিকা’র সাথে তুলনা করা হয়েছে। এ প্রভাবশালী সিনেমাগুলির মতো ‘বিফোর দ্য রেইন’ এর প্লটও শেষে এসে পেছনে মোড় নিয়ে আবার শুরুর সাথে পেঁচিয়ে যায়। টিএস এলিয়টের ভাষায়, “আমার শুরুতেই আমার শেষ।” এমনটা সচরাচর হয় না যে, কারো একটা মাত্র সিনেমা কিংবা প্রথম সিনেমা দেখেই সবাই বুঝে গেল—কোনো গুরুত্বপূর্ণ পরিচালকের আগমন ঘটেছে। কিন্তু ‘বিফোর দ্য রেইন’ এর ভিত্তিতে একথা মানতে হয় যে মানচেভস্কিকে অবশ্যই সিরিয়াসলি নেওয়া দরকার।

তার সিনেমার স্টাইলে অবশ্য ট্যারেনটিনো বা অন্য ডিরেক্টরদের তেমন সরাসরি প্রভাব নাই। এটার চিত্রনাট্য লেখা হয়েছিল ১৯৯১ সালে। যেন এই পরিচালকরা সবাই একসাথে ‘এ-টু-জেড’ তরিকার ধারাবাহিক কাহিনীর উপর বিরক্ত হয়ে গেছিলেন। সিনেমার গল্প যে ইচ্ছামতো অতীত-বর্তমান-ভবিষ্যতে ঘোরাফেরা করতে পারে, সেই সুযোগটা নিতে চাচ্ছিলেন তারা। এজন্যই ছবিটা অনেক বেশি জীবন্ত আর স্বতঃস্ফূর্ত হতে পেরেছে।

স্টকহোমে কুয়েন্টিন ট্যারান্টিনোর সঙ্গে মানচেভস্কি (বামে); ১৯৯৪ সালের ছবি

গল্পের প্রেক্ষাপট হলো ম্যাসেডোনিয়া আর লন্ডনে। ইংরেজি, আলবেনিয়ান আর ম্যাসেডোনিয়ান ভাষায় সেই গল্প বলা হয়, যদিও কোনো ভাষাই খুব বেশি ব্যবহার করা হয়নি (আশ্রমে থাকা এক খ্রিস্টান সন্ন্যাসীর চরিত্র তো রীতিমতো মৌনব্রত নিয়েছে)।

মানচেভস্কির জন্ম ম্যাসেডোনিয়ায়। তিনি স্বীকার করেই নিলেন যে আমেরিকানদের মধ্যে খুব বেশি মানুষ বলতে পারবেন না এ দেশটা ঠিক কোথায়।

সম্প্রতি শিকাগোতে তার সাথে দেখা হয়েছিল আমার। জিজ্ঞেস করলাম, পুরা জায়গাটাই কি আগে যুগোস্লাভিয়া ছিল নাকি?

“ম্যাসেডোনিয়াই ছিল, তবে যুগোস্লাভিয়ার একটা অংশ হিসাবে।”

“ম্যাসেডোনিয়া” নামটা নিয়েও তো একটা বিতর্ক আছে মনে হয়?

“হ্যাঁ, গ্রীকরা মনে করে এই নামের স্বত্ব তাদের কাছে।”

কিন্তু এই নাম তো আছে অনেক লম্বা সময় ধরে?

“হ্যাঁ, এ ভৌগোলিক অঞ্চলকে রাজা ফিলিপের আমল থেকে ম্যাসেডোনিয়া বলে ডাকে সবাই। খ্রিস্টপূর্ব ৫ সাল তখন। নামটা ফিলিপ নিজেই দিয়েছিলেন, তাই এ নামের স্বত্ব আসলে তার।”

তিনি হাসলেন। মানচেভস্কির মধ্যে একরকম তারুণ্য আছে, বয়স ত্রিশের মতো। স্বচ্ছন্দ হাসিমুখে অনায়াসে ইংরেজিতে কথা বলেন। এখন তার ইংরেজিতে অবশ্য প্রয়োজনীয় সব বিশেষ্যপদই আছে।

সাউদার্ন ইলিনয় ইউনিভার্সিটি থেকে পাস করার পর কয়েকটা পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা দাঁড় করানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত টিভি বিজ্ঞাপন, এক্সপেরিমেন্টাল মুভি আর এমটিভির জন্য মিউজিক ভিডিও বানাতে হয় তাকে।

বিফোর দ্য রেইন-এর শুটিংয়ে সিনেমাটোগ্রাফার দারিউস খন্দজি’র (ডানে) সাথে মানচেভস্কি

‘বিফোর দ্য রেইন’-এর প্রযোজনার জন্য টাকা যোগাড় করতে বিজ্ঞাপন এবং মিউজিক ভিডিওর পরিচিত লোকদের কাছে ধরনা দেন তিনি। তাদের মারফতেই ইনভেস্টর পাওয়া যায়। এছাড়াও মানচেভস্কি কীভাবে যেন ফিল্ম ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিগুলির কাছ থেকে একটা সম্ভাব্য যুদ্ধক্ষেত্রে শুটিং করার অনুমতি আদায় করে নিয়েছিলেন। “পলিটিক্যাল রিস্ক কোম্পানিরা আমাদেরকে প্রায় পাঁচটা আলাদা আলাদা সম্ভাবনা দেখিয়েছিল—কীভাবে শুটিং চলার সময়ই যুদ্ধ শুরু হয়ে যেতে পারে।”

বর্তমানে সার্বিয়া ও ক্রোয়েশিয়ার মধ্যে যেখানে যুদ্ধ চলছে, ম্যাসেডোনিয়া সেই জায়গার একদম কাছেই। ম্যাসেডোনিয়ার নিজস্ব ইতিহাসেও খ্রিস্টান-মুসলিমদের মাঝে রক্তপাতের ঘটনা আছে। তবে বর্তমানে কলহের একপাশে থাকলেও ওইখানকার পরিস্থিতি সম্পর্কে মানচেভস্কি জানালেন, “মনে হয় সবাই কিছু একটা ঘটার জন্য অপেক্ষা করতেছে, কিন্তু কেউ জানে না সেই কিছু একটা কী। হতে পারে ট্র‍্যাজিক কিছু ঘটবে। কোনো কিছু শেষ হয়ে যেতে পারে, আর সেখান থেকেই হয়তো সবকিছুকে পরিশুদ্ধ করে নতুন কিছু শুরু হবে—বৃষ্টি যেমন আমাদেরকে ধুয়ে নতুন করে দিয়ে যায়।”

‘বিফোর দ্য রেইন’ তিনটা সেকশনে বিভক্ত। প্রথম ভাগে ম্যাসেডোনিয়ার এক যুবক খ্রিস্টান সন্ন্যাসী তার আশ্রমের রুমে একজন আলবেনিয়ান মেয়েকে লুকিয়ে থাকতে দেখে। মেয়েটাকে খুনের দায়ে খোঁজা হচ্ছে। দ্বিতীয় ভাগের গল্প আলেক্সান্ডারকে নিয়ে— বিখ্যাত ফটোগ্রাফার, ম্যাসেডোনিয়ায় জন্ম। কিন্তু এখন বিশ্বের নাগরিক, পুলিৎজার প্রাইজও জিতেছে। বিবাহিত এক মহিলার সাথে তার অনেকদিনের সম্পর্ক। লন্ডনে তাদের আবার দেখা হয়।

আর সিনেমার তৃতীয় অংশে সেই ফটোগ্রাফার ম্যাসেডোনিয়ায় ফেরত আসে। এসে নিজের জন্মভূমির উদ্বেগ আর দুর্দশা দেখতে পায়। তার প্রথম ভালোবাসার সাথে আবার দেখা করতে চায় সে। কিন্তু মেয়েটা যেহেতু মুসলিম আর সে খ্রিস্টান, দুই ধর্মের মানুষদের কেউই চায় না তাদের দেখা হোক।

বিফোর দ্য রেইন সিনেমার দৃশ্য

যদি এভাবে বলা হয় যে—এই ছবির প্রতিটা সেকশনের গল্প তার আগের সেকশনের পরে ঘটে—তাহলে কথাটা ভুল হবে না। আবার ঠিকও হবে না। আসলে মানচেভস্কি গল্পের ভেতর সময় নিয়ে ছোট একটা চালাকি করেছেন, তাই নিশ্চিত হয়ে বলা সম্ভব না। কারণ ঘটনাগুলিকে একটা বৃত্তের মতো দেখাতে চেয়েছেন তিনি।

আজকের লোকেরা একজন আরেকজনকে ঘৃণা করে কারণ তাদের বাবা-মা আর দাদা-দাদিরাও একে অন্যকে ঘৃণা করতো। এভাবে চলতে থাকলে শুধু সময়ের পুনরাবৃত্তিই ঘটতে থাকে, চক্রের মতো।

“সিনেমার দুইটা জায়গায় এসে গল্পের এ বৃত্ত একটু ভেঙে যায়,” বললেন মানচেভস্কি, “লন্ডনে বসে মহিলাটা কিছু ফটোগ্রাফ দেখেন। গল্পটা আসলেই একটা বৃত্ত হলে ফটোগুলি সেখানে থাকার কথা না। এছাড়া ফোনে কথা বলার একটা দৃশ্য আছে যেটা লজিক্যালি সম্ভব না।

এ দুই ঘটনাকে বলা যায় একধরনের টাইম প্যারাডক্সের অংশ। আবার এটাও হতে পারে যে ঘটনাগুলি বোঝাতে চাচ্ছে, বৃত্তটা একেবারে গোল না। হয়তো পরবর্তী চক্রে গিয়ে সেই বৃত্ত খুলে যেতে পারে। হয়তো আলেক্সান্ডারের মতো আত্মত্যাগের মাধ্যমেই তা সম্ভব।”

তার মানে আপনার গল্পের মেসেজ কি সিনেমাটার কাঠামোর মধ্যে?

কাঁধ ঝাঁকালেন তিনি, “হতে পারে সেই বৃত্ত ভাঙার জন্য কাউকে বলতে হবে, এই সীমাহীন তিক্ততার সাথে আমি একমত হতে পারতেছি না। তোমার দাদা আমার দাদার ভেড়া মেরেছিল বলে যদি আমি তোমার উপর প্রতিশোধ নিতে যাই, তাহলে তো চিরকাল এভাবেই চলতে থাকবে।”

সিনেমার যে অংশটুকু লন্ডনে ধারণ করা হয়েছে, ওই সেকশনটা আসলে দেখাতে চায় যে এসব আঞ্চলিক বিবাদ শেষ পর্যন্ত আর অঞ্চলে সীমাবদ্ধ থাকে না। রেস্টুরেন্টের ভেতর একটা দুর্দান্ত সিক্যুয়েন্স আছে, যেখানে ফোরগ্রাউন্ডে দুইজন গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রের আলাপ চলতে থাকে। একই সময় ব্যাকগ্রাউন্ডে আরেকটা কথোপকথন শুরু হয়, তবে সেটার সাথে আপাতদৃষ্টিতে মূল গল্পের কোনো সম্বন্ধ নাই বলেই মনে হয়। কিন্তু হুট করে এ সবকিছুর অপ্রত্যাশিত এক বিস্ফোরণ ঘটে।

বিফোর দ্য রেইন সিনেমার দৃশ্য

“আমি বলতে চাচ্ছি যে, এক পর্যায়ে এসে আপনি আর চ্যানেল চেঞ্জ করতে পারবেন না। এই সমস্যাগুলি শুধু পৃথিবীর এক কোণায় পড়ে থাকে না, একটা সময় আপনার লিভিং রুমে এসে ঢুকে যায়। আমরা যখন এই সিনেমা এডিট করছিলাম, তখন জর্জিয়ার একটা স্থানীয় ঘটনার প্রভাব লন্ডনে চলে আসে। প্রাক্তন-সোভিয়েত জর্জিয়ার রাষ্ট্রদূতকে মেরে ফেলা হয়। এ ঘটনার সাথে জড়িত একজন লোকের শ্বশুরবাড়ির আত্মীয় হিসাবে কিছু নির্দোষ মহিলাকে সন্দেহ করে তারা। এর কারণে আকস্মিক এমন দুইজন ব্রিটিশ মহিলাকে মারা যেতে হলো যারা জানেই না সোভিয়েত জর্জিয়া ঠিক কোন জায়গায়।”

মানচেভস্কির কাছ থেকে জানতে চাইলাম, সামনে নতুন কোনো প্রজেক্টের জন্য কাজ করছেন কিনা।

“কোনো কাজেই হাত দেই নাই আমি। একটা কিছুও না। আমার এই সিনেমাটা বানাতে খুব ভালো লেগেছে। এর স্টোরিটেলিংয়ের অংশটা পছন্দ হয়েছিল। কাজের মধ্যে ডুবে থাকতেও খুব ভালো লেগেছিল আমার। তবে মুভি বিজনেসে একই সাথে অনেক আজেবাজে জিনিসও আছে। আপনার অপছন্দের মানুষদের সঙ্গে অনেক সময় কাটাতে হয়। এখনই রিটায়ার করার মতো সাহস থাকলে আমার জন্য সবচাইতে বুদ্ধিমানের কাজ হতো।”

কথাটা কি আপনি সিরিয়াসলি বলছেন?

“যথেষ্ট পরিমাণ সাহস আর টাকা থাকলে অবশ্যই রিটায়ার করতাম। অনেক অনেক বই আছে যেগুলি পড়তে চাই আমি।”

আপনি তাহলে আপনার এই কাজকে সিরিয়াস মনে করেন না।

“কাজ করা বা না করাটা মুখ্য ব্যাপার না। আপনি কাদের সাথে কাজ করবেন এবং কীভাবে করবেন তা বেছে নেওয়ার সুযোগ থাকাটাই আসল।”

কী ধরনের গল্প বলতে চান আপনি? ঠিক কোন টাইপের ফিল্মমেকার হওয়ার ইচ্ছা আছে আপনার?

“সেসব মানুষদের নিয়ে গল্প বলতে চাই যেগুলি আপনাকে চমকে দিবে। অপ্রত্যাশিত সব মোড়ে নিয়ে যাবে আপনাকে। এমন একটা জার্নি যেখানে প্রথম অংশ শেষ হওয়ার পর দ্বিতীয় অংশ শুরু হলে আপনি চিন্তা করবেন, ‘এটা আবার কোথায় আসলাম? কোন জায়গা এইটা?’ যেধরনের গল্প আপনার চিন্তাভাবনা নিয়ে একটু নাড়াচাড়া করে।”

ম্যাসেডনিয়ার মানুষজন আপনাকে নিয়ে নিশ্চয়ই অনেক গর্ববোধ করেন।

খুশি হয়ে মাথা নাড়লেন তিনি, “এমন একটা দেশ, যেখানে এমনকি ভলিবল খেলাতেও জাতীয় দলকে ‘ম্যাসেডোনিয়ান জাতীয় দল’ বলা যায় না। এর মধ্যে হঠাৎ করেই একটা ম্যাসেডোনিয়ান সিনেমা খুব ভালো করে বসলো। মানুষ তাতে সাড়া দিয়েছে। টিভি আর পাইরেসির কারণে থিয়েটারগুলি সব নিস্তেজ হয়ে পড়েছিল। এইবার প্রায় ১২ বছর পর কোনো সিনেমা হিট করলো।”

আমি শুনেছি ছবিটা নাকি ম্যাসেডোনিয়াতে হ্যারিসন ফোর্ডের ‘দ্য ফিউজিটিভ’ (১৯৯৩) এর চাইতেও বেশি কামাই করেছে।

তিনি হাসলেন, “হ্যাঁ। যদিও আমি শিওর, আমেরিকাতে ‘দ্য ফিউজিটিভ’ এই সিনেমার চাইতে অনেক বেশি আয় করবে।”