কর্মদক্ষতার ফাঁদ এড়ানো বেশিরভাগের জন্যই কঠিন। কিন্তু এই উপলব্ধি প্রয়োজন—বেশি বেশি কাজ করলেও সময়ের ঘাটতি পোষানো বাস্তবে সম্ভব না।

অতিরিক্ত উৎপাদনশীলতা বাড়তি চাপের কারণ। ব্যস্ততার এই চক্র ভাঙা জরুরি।

কিছু ব্যস্ততা হয়ত আনন্দের। আমেরিকান চিত্রশিল্পী রিচার্ড স্কারির ছোটদের বইয়ের বিজিটাউন শহরে কে না থাকতে চাইবে? সেখানের দোকানি বিড়াল আর দমকলকর্মী শূকরেরা চূড়ান্ত ব্যস্ত। বিজিটাউনের কেউই অলস না। অলস কেউ থাকলেও, পিইয়ংইয়ং স্টাইলে শহর কর্তৃপক্ষ তাদের চোখের আড়ালে রাখে। ব্যস্ততায় বিজিটাউনের বিড়াল-শূকরদের দমবন্ধ হয়নি। তারা উৎফুল্ল, কর্মব্যস্ত। আত্মবিশ্বাসী—যত কাজই থাকুক, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ হবে। কিন্তু, আমাদের এই আত্মবিশ্বাস নেই। আছে কাজ শেষ করতে না পারার সার্বক্ষণিক ভয়।

গবেষণা অনুসারে, অর্থনৈতিক শ্রেণীর প্রতি ধাপেই এই ভয় কাজ করে। সন্তানের পেটের ভাতের জন্য একসাথে দুটি কম বেতনের চাকরি করলে প্রচণ্ড চাপ অনুভব করা স্বাভাবিক। কিন্তু, পরিস্থিতি যদি এর থেকে ভালও হয়—চাপ থাকবে। চাপের কারণও অযৌক্তিক লাগবে না। চড়া বন্ধকের টাকায় আরেকটু সুন্দর বাড়ি বানানোর চাপ, ভাল বেতনের চাকরির বিপরীতে বৃদ্ধ বাবা মা’র সাথে সময় কাটাতে না পারার চাপ অথবা জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জীবন উৎসর্গ করতে না পারার আফসোস।


অলিভার বার্কম্যান
ফোর থাউজ্যান্ড উইকস: টাইম ম্যানেজমেন্ট ফর মর্টালস (২০২১) বইয়ের অংশবিশেষ


জরুরি মনে হওয়া সবকিছুর জন্য সময় করতে চাওয়ার সমস্যা হল, ব্যাপারটা অসম্ভব। পরিকল্পনার ঘাটতি বা কৌশলের অভাব না। ঘুম থেকে আগে ওঠার ব্যাপারও না। অপদার্থ হবার ব্যাপার তো না-ই। সমস্যা হল, জরুরি সবকিছুর জন্য সময় করা অসম্ভব—এটা বুঝতে না পারা। আরো বেশি কাজ করলেই যে সবকিছু শেষ করে শান্তি পাওয়া যাবে এই ধারণা ভুল।

অলিভার বার্কম্যান (Oliver Burkeman), জন্ম. ১৯৭৫, লিভারপুল, ইউকে

কারণ, যত বেশি কাজ শেষ করা যাবে, লক্ষ্য তত বাড়তেই থাকবে। আরো অনেক কাজ দরকারি, অর্থবহ আর বাধ্যতামূলক মনে হবে। দ্রুত কাজ করার সুনাম থাকলে আরো বেশি কাজ ভিড় করবে। অপরাধবোধ থেকে বাঁচতে বাচ্চাদের সাথে সময় কাটানো শুরুর পর হঠাৎ নতুন সামাজিক চাপ আসবে। আরেকটু বেশি সময় ব্যায়াম বা অভিভাবক-শিক্ষক সমিতিতে যোগদান কিংবা অবশেষে মেডিটেশন শুরুর চাপ। চাকরির পাশাপাশি দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন—নিজের একটা ছোট ব্যবসা শুরু এবং অল্প কয়দিনেই সেটাকে আরো বড় করে তোলার চাপ।

পরিস্থিতিগুলির মূল ব্যাপারটা হল—দক্ষতার ফাঁদ। উৎপাদনশীলতার নানা কৌশলে আর কঠোর পরিশ্রমে নিজেকে দক্ষ করতে পারলেই “যথেষ্ট সময়” পাওয়া যাবে—তেমন না। চাহিদা ক্রমাগত বাড়তেই থাকবে। সমস্ত কাজ শেষে শান্তির বদলে বরং নতুন কাজ যোগ হবে।

কর্মদক্ষতার ফাঁদ এড়ানো বেশিরভাগের জন্যই কঠিন। কিন্তু এই উপলব্ধি প্রয়োজন—বেশি বেশি কাজ করলেও সময়ের ঘাটতি পোষানো বাস্তবে সম্ভব না। মাত্রাছাড়া কাজের চাপে বরং হিতে বিপরীত হয়। নির্ধারিত সব কাজ শেষ করে চূড়ান্ত মনের শান্তি পেতে চাওয়ার চিন্তা বাদ দেওয়া দরকার। বর্তমান ব্যস্ততা, সময়ের অভাব আর প্রচণ্ড চাহিদার মধ্যেও শান্তি খুঁজে নেওয়া এতে সহজ হয়। মনের শান্তিকে সমস্ত কাজ শেষ করতে পারার উপরে নির্ভরশীল করে ফেলা অহেতুক। সময়ের বিচ্ছিরি চাপকে ঝেড়ে ফেলেই বরং সময়কে আরো ভাল ভাবে কাজে লাগানো সম্ভব।

ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ জিম বেনসনের কথায়—ক্রমাগত আরো বেশি দক্ষ হয়ে ওঠার মানে আরো বেশি করে অন্যদের সীমাহীন প্রত্যাশা পূরণের ভাণ্ডার হয়ে ওঠা। বেতনভুক্ত কার্যদক্ষতা বিশেষজ্ঞ হিসেবে, এই ব্যাপারটি ছিল আমার জন্য সবচেয়ে অস্বস্তিকর। নিজেকে ওস্তাদ মানুষ ভাবতাম। কিন্তু দুঃখজনকভাবে টের পাই, সবথেকে মন দিয়ে শেষ করা কাজগুলিই ছিল অজরুরি। জরুরি কাজ বরং অসমাপ্ত থাকত। অনির্দিষ্ট সময় পরে বা ঘাড়ের ওপর ডেডলাইন পড়লেই সেগুলি শেষ হত। তাড়াহুড়ায়, আধাখেচড়াভাবে।

নিয়মিত পাসওয়ার্ড পরিবর্তনের গুরুত্ব নিয়ে পত্রিকার পাঠানো মেইলটা খুব দ্রুত নজর কাড়ত। যদিও এটা এড়ালে সমস্যা ছিল না। কারণ, শিরোনামে বড় বড় করে “দয়া করে পড়ুন” লেখা দেখলে ধরা যায় আসলে অত জরুরি কিছু সেখানে নেই। অথচ, নয়া দিল্লী থেকে পাঠানো আমার পুরানো বন্ধুর লম্বা চিঠিটা পড়া হত না। কারণ সেটার জন্য তো সম্পূর্ণ মনোযোগ লাগত। লাগত একদম ফাঁকা সময় আর ছোট কিন্তু জরুরি সব কাজের চাপমুক্তি।

দক্ষ ও দায়িত্ববান কর্মী হিসেবে আমি তাই টেবিল গোছাতে মন দিতাম। ছোট কাজগুলি শেষ করে জরুরি কাজের রাস্তা বানাতে ব্যস্ত হতাম। দিনশেষে কেবল এটা আবিষ্কারের জন্য যে—ঐ ছোট ছোট কাজেই আমার দিন শেষ। গোছানো টেবিল রাতের মধ্যেই অগোছালো। নয়া দিল্লীর সেই বন্ধুর চিঠির উত্তর দেওয়ার মত ফাঁকা সময় কখনোই আসেনি।

এভাবে বছরের পর বছর সবচেয়ে জরুরি, আন্তরিক কাজগুলি ফেলে রাখা সম্ভব। ধীরে ধীরে এই সমস্যার সমাধান পাই। যা অনেকটা দক্ষতার বিপরীত। নিজেকে সবকিছুতে ওস্তাদ বানানোর ইচ্ছা বাদ দেওয়া। চাপ আর উদ্বেগকে মেনে নেওয়া, সবকিছুতে সবথেকে সেরা হওয়ার চিন্তা ত্যাগ করা, স্বয়ংক্রিয়ভাবে আরো বেশি কিছু করতে ঝাঁপ না দেওয়া।

ফোর থাউজ্যান্ড উইকস: টাইম ম্যানেজমেন্ট ফর মর্টালস (২০২১)

এভাবে কাজের অর্থ হল—টেবিল গোছাতে ব্যস্ত না হওয়া। টেবিল না গুছিয়ে সবথেকে জরুরি কাজটা আগে করা। অগোছালো টেবিলের অস্বস্তি আর তুলনামূলক কম জরুরি ছোট কাজ করতে না পারার আফসোস সাথে নিয়েই। এরপরেও বিশেষ পরিস্থিতিতে হয়ত অনেক বেশি কাজ একসাথে করা লাগতে পারে। কিন্তু সেটা ব্যতিক্রম। একদিনে সব কাজ শেষ করে ফেলার বিভ্রম থেকে বের হওয়া দরকার।

আরেক হাস্যকর ফাঁদ হল সুবিধামত কাজ শেষ করার সুযোগ। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান বর্তমানে, কাজের চাপ মোকাবেলায়—দীর্ঘ বিরক্তিকর কাজগুলি সুবিধামত শেষ করার স্বাধীনতার আশ্বাস দেয়। কিন্তু এতক্ষণে এটা বোঝা স্বাভাবিক—এতে সুবিধার বদলে অসুবিধা বাড়ে। দক্ষতার ফাঁদের অন্যান্য অসুবিধার মত এটাও ঝামেলার। এই পদ্ধতিতে বের হওয়া ফাঁকা সময় বরং অন্যান্য অজরুরি কাজ দখল করে নেয়। বিরক্তি এড়াতে গিয়ে উল্টা জরুরি কাজ বাদ পড়ে যায়।

ব্যাপারটা এভাবে কাজ করে। স্টার্ট-আপের ভাষায়, সিলিকন ভ্যালিতে ভবিষ্যৎ নিশ্চিতে “পেইন পয়েন্ট” খুঁজে বের করে সেটাকে অতিক্রমের সুযোগ তৈরি জরুরি। প্রতিদিনের কাজের যে ছোট বিরক্তিকর অংশ বাকি কাজের সমস্যা করে, সেটাই “পেইন পয়েন্ট”। উবার যেমন এলাকার ট্যাক্সি কোম্পানির নাম্বার বের করে কল করার “পেইন” বা রাস্তায় দাঁড়ায়ে ট্যাক্সি খোঁজার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দেয়। অ্যাপল পে রেহাই দেয় ব্যাগ থেকে টাকা বের করার ঝামেলা থেকে। ফুড ডেলিভারি সার্ভিস সিমলেস তো একদম মুখের উপর বিজ্ঞাপন দেয়—তারা জলজ্যান্ত রেস্টুরেন্ট কর্মচারীর সাথে আলাপ করার যন্ত্রণা থেকে ক্রেতাদের মুক্তি দিতে চায়।

এভাবে সবকিছু মসৃণভাবে চলে—সত্যি। কিন্তু, এই মসৃণতার ধারণাও আদতে বায়বীয়। কারণ, জীবনের অমসৃণতাই হয়ত জীবনকে যাপনের সৌন্দর্য দেয়। শারীরিক-মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য জরুরি সম্পর্কগুলিকে টিকিয়ে রাখে। সম্প্রদায়ের বন্ধন অটুট রাখে। এলাকার ট্যাক্সি কোম্পানির সাথের সম্পর্কটা সূক্ষ্ম সামাজিক সুতার মত। প্রতিবেশীর সাথে আত্মীয়তার মত যেটা গড়ে ওঠে। এলাকার চাইনিজ খাবারের দোকানের মহিলাটির সাথে কথা বলা গুরুত্বহীন মনে হতে পারে। কিন্তু এই যোগাযোগটাই এমন পরিবেশ টিকিয়ে রাখে যেখানে মানুষ এখনও মানুষের সাথে কথা বলে। যেখানে প্রযুক্তির তৈরি একাকীত্ব দখল নেয়নি। যদিও অ্যাপল পে-এর একটা ছোট সুবিধা হল—অপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনা থেকে এটা একটু হলেও দূরে রাখতে পারে।

শিল্পী. JOHN S. DYKES

সুবিধামত কাজের স্বাধীনতা কাজকে সহজ করে ঠিকই। কিন্তু কেবল সহজ হওয়াটাই কি আসলে সবক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ? যেমন, একটা সেবার মাধ্যমে পছন্দের ডিজাইনের জন্মদিনের কার্ড মেইল করা যায়। সরাসরি দেখা করার ঝামেলা থাকে না। এটা একদম কোনো কিছু না দেওয়ার থেকে ভাল। কিন্তু, নিজে কার্ডটা কেনা বা হাতে লেখা আর সরাসরি গিয়ে সেটাকে পোস্ট করার আন্তরিকতা এতে নেই। কেননা, জন্মদিনে শুভেচ্ছার থেকে শুভেচ্ছা জানানোর যে চেষ্টা, সেটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ; দেখা করা বা নিজে কার্ড কেনা অসুবিধার হলেও। সুবিধাজনক উপায় খুঁজতে গিয়ে অনেক কাজই তার গুরুত্ব হারিয়ে ফেলে।

সুবিধা আর মসৃণতার চক্করে জীবনের দরকারি অসুবিধার কাজগুলিও বিরক্তিকর লাগে। আইন অধ্যাপক ও হোয়াইট হাউজ প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ টিম উ বলেন, “লাইনে না দাঁড়িয়ে কনসার্টের টিকেট কেনা সম্ভব হলে লাইনে দাঁড়িয়ে নির্বাচনে ভোট দেওয়া বিরক্তিকর লাগবেই।” কাজ এখন দুইভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছে। এক, সুবিধাজনক ও সহজ কিন্তু বিশেষ পরিস্থিতি ছাড়া গুরুত্বহীন কাজ। দুই, জরুরি কিন্তু অসুবিধাজনক বিরক্তিকর কাজ।

ব্যক্তি বা পরিবার হিসেবে এই সুবিধার ফাঁদ ভেঙে বেরোনো কঠিন। জীবন যত সহজ হচ্ছে, কাজের কঠিন উপায় বেছে নেওয়াকে তত বেশি পাগলামি মনে হচ্ছে। স্মার্টফোন বাদ দেওয়া, গুগল ছেড়ে দেওয়া বা হোয়াটসঅ্যাপের বদলে মেইল করতে শুরু করলে মানসিক সুস্থতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠাও অস্বাভাবিক না।

বছরের পর বছর চেষ্টা করেও সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে জেতা যায় না। অগুনতি ঘণ্টা আর শৌখিন নোটবুক, কলমের পেছনে টাকা খরচ করে যাদুকরি রুটিন বের করার চেষ্টা অর্থহীন। সময়ের সঠিক ব্যবস্থাপনা, অভ্যাসের বদল বা নিয়ম মেনে চললেই অবশেষে সময়ের সাথে দৌড়ে পারা যাবে—এই ধারণা ভুল।

শিল্পী. JOHN S. DYKES

একবার, প্রতিটা কাজকে পনের মিনিটের ভাগে সাজিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলাম। রান্নাঘরের ঘড়িতে পাঁচ মিনিটের বিরতিসহ পঁচিশ মিনিট পর পর কাজ করার সিদ্ধান্ত নিলাম। এই কৌশলের প্রাতিষ্ঠানিক নাম পমোদোরো টেকনিক। অনলাইনে এর একনিষ্ঠ অনুসারীরা আছেন। গুরুত্ব অনুসারে কাজের তালিকাকে ক, খ, গ ভাগে ভাগ করলাম। চেষ্টা করলাম প্রতিদিনের কাজকে লক্ষ্য আর লক্ষ্যকে গুরুত্বের সাথে মেলাতে। অনুমান করা যায় খ আর গ তালিকার ঠিক কতগুলি কাজ করা সম্ভব হয়েছিল?

ভেবেছিলাম এই কৌশলে অবশেষে শান্ত, নিরবচ্ছিন্ন কাজের সময় পাব। কিন্তু, তা কখনো হয়নি। বরং, চাপ আর অশান্তি বেড়েছে। মনে পড়ে, ২০১৪’র শীতের সকালে, ব্রুকলিনে আমার বাসার কাছের পার্কের বেঞ্চে বসে ছিলাম। হাজারটা অসমাপ্ত কাজের চাপ, ভয়, দুশ্চিন্তা আর ঠাণ্ডায় জমে যাচ্ছিলাম। আর হঠাৎ বুঝতে পেরেছিলাম এসব কোনো কৌশলই কাজ করবে না। সবকিছুর নিয়ন্ত্রণ পাওয়া, সবকিছু জিতে যাওয়ার পরিস্থিতিতে পৌঁছানো অসম্ভব। যত কঠিন, দক্ষ আর শৃঙ্খলিত চেষ্টাই করি না কেন। একদম সব দায়িত্ব শেষ করে, ভবিষ্যতের চিন্তামুক্ত অবস্থায় যাওয়ার চিন্তা অবাস্তব।

আরো পড়ুন: ফেইয়েরাবেন্ড: জার্মান পদ্ধতিতে কাজ থেকে ছুটি নিন

মজার ব্যাপার, মনের শান্তি পাওয়ার এসব কৌশল যে ভুয়া বুঝতে পারাটাই বরং আমাকে তৎক্ষণাৎ মানসিক শান্তি দিয়েছিল। একবার যদি উপলব্ধি হয় যে পুরোটা সময় অসম্ভবের পেছনে দৌড়াচ্ছিলাম, তাহলে নিজেকে অন্যায় ভাবে দোষারোপ করতে থাকা কঠিন। মানবিক জটিলতার সমাধান, চাপমুক্তি, লক্ষ্য অর্জন ও পরিস্থিতির সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ আর স্বাধীনতার জন্য অনেক অনেক চেষ্টা করা যায়। কিন্তু, এই চেষ্টায় উল্টা জীবন আরো বেশি চাপের, শূন্যতার, হতাশার হয়ে ওঠে। নিজের সীমাবদ্ধতা মেনে নেওয়া জরুরি। সীমাবদ্ধতার বিপরীতে না গিয়ে, সীমাবদ্ধতার সাথে কাজ করে যেতে থাকলেই জীবনকে অর্থবহ, কর্মচঞ্চল আর আনন্দের লাগবে।

সময়ের দুশ্চিন্তা আর অস্থিরতা কখনোই পুরোপুরি গায়েব হবে না। আমাদের সীমাবদ্ধতা স্বীকারের ক্ষমতাও সীমাবদ্ধ। কিন্তু, এর থেকে ভালো কোনো সময় ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি আমার জানা নেই। যা বাস্তব পরিস্থিতি ঠিক যেমন সেটাকে তেমন হিসেবে মেনে নিয়ে কাজ করার পদ্ধতির সমান না হলেও অন্তত অর্ধেক কার্যকর।

সূত্র. ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল, ৬ আগস্ট ২০২১
অনুবাদ: সাব্বির পারভেজ সোহান